একটি সময় ভালো জাতের আম খেতে অপেক্ষা করতে হতো দেশের উত্তরাঞ্চলের আম আসা পর্যন্ত। তবে ৮-১০ বছর ধরে সেই অপেক্ষার দিন কমতে শুরু করেছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মানুষের। কেননা স্থানীয় অনেক চাষি আম চাষে ঝুঁকেছেন। এতে মিটছে স্থানীয় চাহিদা। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমাল সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। গাছের ডালপালা ভেঙে প্রচুর পরিমাণ আম ঝরে পড়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।
Advertisement
উপজেলার বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, অসংখ্য গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে আছে। কোনো কোনো গাছ উপড়ে গেছে। কোনো গাছের সম্পূর্ণ, আংশিক অপরিপক্ক আম গাছতলায় পড়ে আছে।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মুসুল্লি। তার ছয় একর জমিতে প্রায় ৭০০ গাছে আম্রপালি, বারি-৪, কিউঝাই, গরুমতি, ব্যানানা, ফজলি, আশ্বিনা, গোপালভোগসহ প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমাল তার সর্বনাশ করে দিয়েছে।
জাহাঙ্গীর মুসুল্লি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে আমার ১০০ মণের ওপরে আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার বাজারমূল্য ৫-৬ লাখ টাকা। এই আম বিক্রি করার সময় এখন শুরু হলেও শেষ হতে জুলাই মাস পর্যন্ত সময় লাগতো। এখন যে আম নষ্ট হয়েছ তার অল্পকিছু খাওয়ার উপযুক্ত হলেও বেশিরভাগই ফেলে দিতে হবে। এর আগে যতবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলে আঘাত হেনেছে ততবারই তার বাগান ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান তিনি।
Advertisement
আবুল হোসেন রাজু নামের একজন স্থানীয় জানান, কলাপাড়া উপজেলায় দুই শতাধিক ছোট-বড় আমচাষি রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় রিমালে সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে কুয়াকাটা এলাকার জাহাঙ্গীর মুসুল্লি, এসাহাক মুন্সি, রুবেল মুসুল্লিসহ বেশ কয়েকজন বড় বাগান মালিক রয়েছেন। তাদের বাগানগুলো মানুষ দেখতেও আসতো। তারাই বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
উপজলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন জানান, রিমালের তাণ্ডবে উপজেলায় ১৮০ হেক্টর আবাদি জমির শাকসবজি, ৫৮ হেক্টর পাট, ২৫ হেক্টর পেঁপে, ৫০ হেক্টর কলা, ১০ হেক্টর তিল, ১৫০ হেক্টর আম, ১০৬ হেক্টর আউশ বীজতলা ও ১৭৮ হেক্টর জমির আউশ আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষিখাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ আট কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে চাষিদের সহযোগিতা করা হবে।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/এএসএম
Advertisement