গাজায় আর কোনো স্থানই এখন নিরাপদ নয়। যেসব এলাকা নিরাপদ ভেবে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিল সেসব স্থানেও হামলা চালানো হচ্ছে। রাফার পশ্চিমাঞ্চলে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত একটি তাঁবুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনই নারী এবং কিশোরী।
Advertisement
গত কয়েকদিন ধরেই রাফার বিভিন্ন স্থানে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। এদিকে স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অপরদিকে রাফায় বিমান হামলা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার অনুরোধে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই-কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে হামলার যেসব ছবি সামনে এসেছে, তা ভয়াবহ। ইসরায়েল যেভাবে যুদ্ধ করছে, তাতে প্রচুর সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর রোববারের বিমান হামলা বুঝিয়ে দিয়েছে যে গাজায় কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।
ভলকার তুর্ক আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রাফায় হামলা বন্ধের রায় দিলেও ইসরায়েল তা মানছে না। তাছাড়া ইসরায়েলের যুদ্ধ কৌশল ও পদ্ধতিতে এখনো তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। আমি ইসরায়েলকে আইসিজের নির্দেশ মেনে রাফায় আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
Advertisement
জাতিসংঘ বলছে, তারা গত তিন সপ্তাহে প্রায় ১৭০ ট্রাক মানবিক সহায়তা পেয়েছে। কিন্তু সেখানে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সহায়তা প্রয়োজন। তারা যে সহায়তা পাচ্ছে তা বিশাল সমুদ্রে এক বিন্দু জলের মতো। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় সহায়তা খুব সামান্যই মিলছে।
মাসের প্রথম দিকেই শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে ১০ লাখ মানুষ রাফা থেকে পালাতে বাধ্য হয়। এদের বেশিরভাগই গাজায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কারণে একেক সময় একেক এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলগামী আরও তিন জাহাজে হুথির হামলা মধ্য ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলা আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে হামলা, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় ৩৬ হাজার লেবানন থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলে ক্ষয়ক্ষতিগত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের তাণ্ডবে ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮১ হাজার ১৩৬ জন। অপরদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ১৩৯। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
Advertisement
টিটিএন