ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৮০টি ভৌগলিক এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬৫টি সমিতিতে গ্রাহক পর্যায়ে সংযোগ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ আছে।
Advertisement
এছাড়া ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) স্থাপনায়ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পোল (খুঁটি) বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়া মিটার-ট্রান্সফরমার নষ্ট, তার ছিঁড়ে এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (২৭ মে) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকার ৩০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে রিমালের আঘাতে দুই হাজার ৩৯২টি পোল বিনষ্ট হয়েছে, ট্রান্সফরমার বিনষ্ট হয়েছে এক হাজার ৯৮২টি, তার ছেঁড়ার ঘটনা ৬২ হাজার ৪৫৪টি, ইন্সুলেটর ভেঙেছে ২১ হাজার ৮৪৮টি এবং মিটার বিনষ্ট হয়েছে ৪৬ হাজার ৩১৮টি। সার্বিকভাবে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি ৭৯ কোটি দুই লাখ টাকা।
Advertisement
এছাড়া ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) পোল বিনষ্ট হয়েছে ২০টি, পোল হেলে পড়েছে ১৩৫টি, বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে ২৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার, ১১ কেভি (কিলোভোল্ট) পোল ফিটিংস বিনষ্ট হয়েছে ১৪২ সেট, ট্রান্সফরমার বিনষ্ট হয়েছে ১২টি, ১১ কেভি ইন্সুলেটর বিনষ্ট হয়েছে ১৩৪টি। এখানে সার্বিকভাবে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন
জোয়ারের পানিতে পিরোজপুর প্লাবিত, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালপরবর্তী এফএসআরইউ এর অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থাপনাসমূহের কোনো ধরনের ক্ষতি হয়নি। এখনো প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি ও হাইওয়েভ বিদ্যমান। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হ্রাসকৃত আর এলএনজি সরবরাহ রোববার বিকেল থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে এক হাজার এমএমসিএফডিতে উন্নীত করা হয়। পরে সোমবার দুপুর থেকেই তা এক হাজার ১০০ এমএমসিএফডিতে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় চলমান থাকায় ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিকভাবে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়েছে।
Advertisement
কেন্দ্রীয়ভাবে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তদারকি করা হচ্ছে। জেলাপর্যায় ও সমিতি ভিত্তিক কন্ট্রোল রুম রয়েছে। পরিবরহন-ঠিকাদারদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এলাকায় সব ধরনের কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় মালামালসহ প্রস্তুত রয়েছেন। ঝড়-বাতাস কমার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎসংযোগ স্বাভাবিক করা হবে বলেও জানানো হয়।
এনএস/ইএ/এমএস