ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরের একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন চট্টগ্রামের ২০ শতাংশ গ্রাহক। যার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
Advertisement
সোমবার (২৭ মে) বিকেলে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিণের প্রধান প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও ভারী বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বেশকিছু এলাকা সকাল থেকে বিদ্যুতহীন রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে বিভিন্ন ভবনের নিচতলা এবং মিটার ইউনিট পানিতে ডুবে যাওয়ায় এসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে রাতে দুর্যোগের কারণে আমাদের লোড ৩৫০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল। এখন সেটি ৬০০ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এখনো প্রায় ২০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন।’
হুমায়ুন কবির আরও বলেন, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে বিদ্যুৎ অফিস ও সাব-স্টেশনে পানি ঢুকে পড়ায় সকাল থেকে হালিশহর, রঙ্গিপাড়া, শান্তিবাগ, রমনা ও শ্যামলী আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। একইভাবে গাছ উপড়ে পড়ায় ও পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নগরীর বেশকিছু এলাকায় সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
Advertisement
নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ভোর থেকে বিদ্যুৎ নেই। এতে সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এ নগরে বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যাবে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। অন্তত রাতে বিদ্যুৎটা পেলে ঘুমানো যাবে।’
কবে এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সঞ্চালন লাইন ঠিক হলে এবং পানি নেমে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। আশা করছি, রাতের মধ্যে শতভাগ গ্রাহক বিদ্যুৎ পাবেন।’
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। সড়ক-অলিগলি, বাসাবাড়ি হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। থমকে গেছে মানুষের জীবনযাত্রা।
জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে নগরের চকবাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, বাদুড়তলা, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, কালারপোল, বড়পোল, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায়। এসব এলাকায় বেশিরভাগ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে। দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে ঢুকে গেছে পানি। বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। জ্বলছে না রান্নার চুলা।
Advertisement
বেসরকারি অফিস, শিল্প ও কারখানা খোলা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবীরা। বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন রিকশা ও সিএনজিচিলিত অটোরিকশাচালকরা। উন্মুক্ত নালা ও ফুটপাতের ভাঙা স্ল্যাব পথচারীদের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়েছে অনেকটা।
এএজেড/এমএএইচ/এএসএম