টানা ১০ কার্যদিবস দরপতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
Advertisement
এর আগে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে যায়। সেইসঙ্গে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। এ পরিস্থিতিতে সোমবার (২৭ মে) মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে এসেছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। তবে হঠাৎ এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ালে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে এক পর্যায়ে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
এতে আবারও দরপতনের আতঙ্ক পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যে কারণে বাজারে বিক্রির চাপও বাড়ে। ফলে একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৩ পয়েন্ট কমে যায়। এ পরিস্থিতি থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। হঠাৎ করেই বাজারে বিক্রির চাপ কমে ক্রেতা ফিরে আসে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক বাজারে।
Advertisement
বাজারে ক্রেতা বাড়ায় একদিকে যেমন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে, অন্যদিকে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৭৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩১০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫০৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩২২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৮৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়টিক ল্যাবরেটরিজ।
Advertisement
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, লাভেলো আইসক্রিম, আইএফআইসি ব্যাংক, রিলায়েন্স ওয়ান দ্যা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড এবং ফারইস্ট নিটিং।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২২টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এএসএম