দেশজুড়ে

কক্সবাজারে ‘রিমাল’ দুর্যোগ কেটেছে, ভারী বর্ষণ অব্যাহত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল দুর্যোগ কেটেছে কক্সবাজারে। তবে, এর প্রভাবে উপকূলজুড়ে এখনো বইছে ঝোড়ো ও দমকা হাওয়া। থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টিপাত। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরাটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়াছটা, চৌফলদণ্ডী, ভারুয়াখালীর চরাঞ্চল, মহেশখালীর ধলঘাটা, কুতুবদিয়ার নিম্নাঞ্চল, ঈদগাঁওয়ের পোকখালী, গোমাতলীসহ অন্তত ২৪টি গ্রাম।

Advertisement

মেরিন ড্রাইভ, ঈদগাঁওয়ের ভাদিতলাসহ বেশকিছু এলাকায় গাছ উপড়ে সড়কে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক তার-পিলার। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল কক্সবাজারজুড়ে। আকাশ রয়েছে মেঘাচ্ছন্ন।

তবে কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রিমালের বিপদ কেটে গেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বিপৎসংকেতও। প্রাণহানি এড়াতে উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রথমাংশ কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে অতিক্রম করেছে। শেষের অংশটি তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। তাই আতঙ্কের কিছু নেই।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘এখন ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত কমিয়ে কক্সবাজারকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে ভারী বর্ষণের পাশাপাশি জোয়ারের পানির উচ্চতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।

এদিকে, ভোররাতের দমকা হাওয়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে গাছ ভেঙে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত রয়েছে। ভারী বর্ষণের পর পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে কক্সবাজার শহরে জলাবন্ধতা দেখা দিয়েছে।

মহেশখালী পৌরসভার আব্দুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। তবে পৌর এলাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকেছে এলাকায়।

ধলঘাটার আতাউল্লাহ বলেন, সাগরে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বাড়ায় লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। ইউনিয়নের অনেক এলাকার বেড়িবাঁধ আগে থেকেই ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে।

Advertisement

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। প্রায় ১০ হাজার মানুষকে রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসে খাবারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দমকা হাওয়া বইলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবর পাইনি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলায় ৬৩৮টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা ছিল। ঘূর্ণিঝড়ে জরুরি মোকাবিলায় জিআর নগদ দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা, দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা তহবিলের ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৮ টাকা ও ৪৮৬ টন চাল মজুত রাখা হয়। খোলা হয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। দুর্যোগকালীন কাজ করেছেন আট হাজার ৬০০ জন সিপিপি ও দুই হাজার ২০০ জন রেডক্রিসেন্ট সদস্য।

সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এমএস