দেশজুড়ে

লঞ্চ-ফেরি চলাচল বন্ধ, লক্ষ্মীপুরে আটকা দুই শতাধিক যাত্রী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল বাংলাদেশের উপকূলে ধেয়ে আসছে। এর প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে তীব্র জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হওয়া শুরু হয়েছে নিম্নাঞ্চল।

Advertisement

এরমধ্যে শনিবার (২৫ মে) দুপুর থেকে লঞ্চ-ফেরি বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোলা-বরিশালের উদ্দেশ্যে আসা দুই শতাধিক যাত্রী লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটে আটকা পড়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ে দুর্ঘটনা এড়াতে স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারও চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে আটকাপড়া যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট থেকে আসা কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট আসেন। কিন্তু লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বাড়ি যেতে পারেননি। ৩-৪ দিনের ছুটির দুদিনই লঞ্চঘাটে কেটে গেলো। কখন লঞ্চ ও ফেরি ছাড়া হবে তাও অনিশ্চিত। এতে অনেকেই আবার কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌরুটে বর্তমানে চারটি লঞ্চ চলাচল করে। এরমধ্যে একটি বরিশাল ও বাকি তিনটি ভোলার ইলিশাঘাট পর্যন্ত যায়। শনিবার (২৫ মে) দুপুর ১২টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বিপৎসংকেত দেওয়া হলে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। দুটি লঞ্চ খিজীর-৮ ও সুকান্ত বাবু মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে রয়েছে। বাকি দুটি ভোলার ইলিশাঘাটে রয়েছে।

Advertisement

ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে পাঁচটি ফেরি চলাচল করে। এরমধ্যে সুফিয়া কামাল, বেগম রোকেয়া, কনকচাঁপা, কাবেরী ও কৃষাণী রয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরিগুলো মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে রয়েছে।

মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটের ট্রাফিক সুপারভাইজার শরীফুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। দুটি লঞ্চ ঘাটে নোঙর করা আছে। পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত লঞ্চ বন্ধ থাকবে।

ফেরিঘাটের প্রান্তিক সহকারী রেজাউল করিম রাজু বলেন, পাঁচটি ফেরিই আমাদের ঘাটে রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, লঞ্চঘাটের অদূরে মাতাব্বরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আটকে যাওয়া যাত্রীরা সেখানে থাকতে পারবেন।

Advertisement

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় থেকে মানুষসহ গবাদিপশু রক্ষায় ১৮৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন মানুষের সেবা নিশ্চিতে ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন ত্রাণ তহবিলে ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৪৫০ টন চাল রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কাজল কায়েস/এসআর/জিকেএস