ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
Advertisement
রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী, রূপনগর, শিমুলতলীসহ আরও কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ২০১৭ সালে এ স্থানগুলোতে ব্যাপক বর্ষণের ফলে পাহাড়ধসে অর্ধশতাধিক লোকের প্রাণহানি হয়। পুরো জেলায় নিহত হন ১২০ জন। এবারও প্রাণহানি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এখনো বৃষ্টিপাত শুরু না হওয়ায় তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছুক নন। তাদের দাবি, যখনই ভারী বৃষ্টিপাত হবে, তখন তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাবেন।
ভেদভেদী এলাকার বাসিন্দা ছগির মিয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হবে বলে টিভিতে ও সংবাদে শুনতেছি। দুপুরে মাইকিংও করেছে। তবে এখনো তেমন কোনো প্রভাব আমরা দেখছি না। যদি খারাপ অবস্থা দেখি তাহলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবো।’
রূপনগরের বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ২০১৭ সালে পাহাড়ধসে একদিনে ১৯ জন মারা গেছে। তাই পাহাড়ধস ভয় লাগে। প্রশাসন থেকে আমাদের বলা হয়েছে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে। যদি অবস্থা সুবিধার না দেখি তাহলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবো।’
Advertisement
সুরেশ চাকমা বলেন, ‘পাহাড়ধস হতে পারে বলে শুনেছি। যদি সেরকম কিছু হওয়ার আশঙ্কা দেখতে, বউ-বাচ্চা নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবো।’
জানতে চাইলে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, রাঙ্গামাটি পৌর এলাকাসহ প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র ও কন্টোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
এদিকে রাঙ্গামাটিতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পৌরসভায় ২৯টি এবং ১০টি উপজেলায় ৩২২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় খোলা হয়েছে একটি করে কন্ট্রোল রুম। পুলিশ, আনসার, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় বিষয়টি জানানো হয়। রোববার (২৬ মে) সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
সাইফুল উদ্দীন/এসআর/জেআইএম