বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন। উপজেলায় ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সিপিপির টিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, উপকূলবর্তী ইউনিয়নগুলোতে ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় সতর্কতায় মাইকিং করা হচ্ছে।
Advertisement
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শনিবার দুপুরে ও রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় আগের তুলনায় কম মানুষ চলাচল করতে দেখা গেছে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জরুরি ত্রাণের বরাদ্দ ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসসহ সব প্রস্তুতি গ্রহণ ও জরুরি প্রয়োজনে উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর টিম প্রস্তুত রয়েছে।
উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার থেকে মাইকিং করা হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে যাওয়ার জন্য। এছাড়াও সাগরে যত মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট ও নৌকা মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আগে থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
Advertisement
মঘাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়াও ইউপি সদস্যবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবক টিম ও ছাত্রলীগের কর্মীরা দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার বলেন, ১০ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় আমাদের ৮০ টিম মাঠে থাকবে। ৮০ টিমে এক হাজার ছয় শত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। যারা নিজ নিজ ইউনিটে প্রচারণার কাজ করছে। একটি টিমে ১০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা সদস্য রয়েছে।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ষ্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্টসহ আমাদের তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের টিম প্রস্তুতি রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ভারি বৃষ্টি হলে পাকা বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ভারি বর্ষণ ও দমকা বাতাস না হলে ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই। আমাদের সব উপ-সহকারী ও কৃষকদের সচেতন থাকার জন্য বলা হয়েছে।
Advertisement
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, উপকূলবাসীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ২১টি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাঁচটি টিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১৬টি টিম কাজ করবে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্স, পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছি। সব দপ্তরের কর্মকর্তা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সভা করে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/জেআইএম