প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশে ঘুরে বেড়ানোর মতো অনেক স্থান আছে। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস হচ্ছে দেশের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর আদর্শ সময়। তবে এখন ভ্রমণপিপাসুরা ছুটি পেলেই যে কোনো সময় বেরিয়ে পড়েন ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে।
Advertisement
তেমনই একদিনের ট্যুরে যাওয়ার জন্য অন্যতম এক স্থান হলো কুমিল্লা। এই জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর জন্য সুপরিচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক কুমিল্লা ভ্রমণে কোন কোন স্থানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না-
শালবন বিহার
কুমিল্লা জেলার উত্তর পাশের পাহাড়ি অংশ ময়নামতি ও দক্ষিণ পাশ লালমাই নামে পরিচিত। লালমাই ও ময়নামতির মধ্যবর্তী শালবন বিহার একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। শালবন বিহার ও তার আশপাশে আছে প্রাচীন সভ্যতার বেশ কিছু নিদর্শন।
Advertisement
শালবন বিহার থেকে মাত্র ৫/৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের সমাধিস্থল কুমিল্লার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
ময়নামতি জাদুঘর
ময়নামতি জাদুঘর হলো কুমিল্লার আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ। এই জাদুঘরে আপনি দেখতে পাবেন প্রাচীন আমলের অস্ত্রশস্ত্র, ব্রোঞ্জের পাত্র, স্বর্ণমুদ্রা, রৌপ্যমুদ্রা ও ব্রোঞ্জের তৈরি ৮৬ প্রকার দ্রব্যাদি। শুধু তা ই নয়, এখানে আরও দেখবেন বিভিন্ন বৌদ্ধমন্দির থেকে সংগৃহীত দেড়শ’রও বেশি বৌদ্ধমূর্তি।
কুমিল্লা শহরের ৪/৫ কিলোমিটার বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছাকাছি কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) সৌন্দর্যও মুগ্ধ করার মতো।
Advertisement
আরও পড়ুন
ডোমাখালী সমুদ্রসৈকতে কীভাবে যাবেন ও কী কী দেখবেন? ছুটির দিনে ঢাকার আশপাশেই ঘুরবেন যেসব স্থানেধর্মসাগর দিঘি
কুমিল্লার আরেকটি দর্শনীয় স্থান হলো ধর্মসাগর দিঘি। ধারণা করা হয় যে, ১৭৫০ কিংবা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রজাহিতৈষী রাজা ধর্মপালের নামে রাখা হয়েছে দিঘিটির নাম।
রাজা ধর্মপাল ছিলেন পাল বংশের রাজা ও প্রজাদরদী মানুষ। দুর্ভিক্ষের সময় দুর্ভিক্ষপীড়িত লোকজনকে পানি দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য এই দীঘিটি খনন করা হয়। রাজার উদ্দেশ্য ছিলো প্রজাদের পানির কষ্ট দূর করা।
প্রতিদিন বিকেলে এই দিঘির পাড়ে ভিড় জমান অনেক দর্শনার্থী। কুমিল্লায় বেড়াতে গিয়ে আর যে বিষয়টি একটুও ভুলবেন না তা হলো দেশ সেরা রসমালাইয়ের স্বাদ নেওয়ার। এর পাশাপাশি এখানকার খাদি কাপড়ের পরিচিতিও ব্যাপক।
যাতায়াত ও থাকা
দেশের যে কোনো স্থান থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেনে উঠে আপনি সহজেই কুমিল্লায় নেমে যেতে পারেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ আরও কয়েকটি জেলা থেকে বাস সার্ভিস আছে।
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে এশিয়া লাইন, তিশা, বিআরটিসি, ইকোনো সার্ভিস, রয়েল কোচ প্রভৃতি আরামদায়ক বাস আড়াই ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লায় পৌঁছে।
রাতে থাকার জন্য শহরে আছে হোটেল রেড প্রুফ ইন, কানন লেইক রিসোর্ট লিমিটেড, হোটেল বিলাস, হোটেল সাগরিকা, হোটেল পিপাসা, হোটেল গোমতী প্রভৃতি মাঝারি বাজেটের হোটেল।
একটু নিরিবিলি ও আরামদায়ক বসবাসের জন্য আছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)-এর গেস্ট হাউস যা ‘রাণীর কুঠি’ নামেও পরিচিত।
জেএমএস/এএসএম