সুরা মুলক কোরআনের ৬৭তম সুরা, মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির আয়াত ৩০টি, রুকু ২টি। বেশ কিছু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাতে এ সুরা পাঠ করলে কবরে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সুরাটি তার পাঠকারীর জন্য আল্লাহর সাথে কাছে সুপারিশ করবে। সাহাবিরা এ সুরাটিকে ‘মানেআ’ বা কবরের আজাব প্রতিরোধকারী বলতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন,
Advertisement
سُورَةٌ مِنَ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً، تَشْفَعُ لِصَاحِبِهَا حَتَّى يُغْفَرَ لَهُ: تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.
কুরআনে ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট একটি সুরা আছে। যে ব্যক্তি নিয়মিত ওই সুরা পাঠ করবে তার জন্য সুরাটি ক্ষমা আদায় করা পর্যন্ত সুপারিশ করতে থাকবে। সে সুরা হল, ‘তাবারাকাল্লাযি বিইয়াদিহিল মুলক’। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪০০, সুনানে তিরমিজি: ২৮৯১)
সুরা মুলকের আলোচ্যবিষয় আল্লাহর বড়ত্ব, তার ক্ষমতার বিভিন্ন নিদর্শন, আখেরাতের জীবন, মুমিনদের পুরস্কার, কাফেরদের শাস্তি ইত্যাদি।
Advertisement
(৬)وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
ওয়া লিল্লাযীনা কাফারূবিরাব্বিহিম আযাবু জাহান্নামা ওয়া বি’সাল মাসীর।আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!
(৭)إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقاً وَهِيَ تَفُورُ
ইযা উলকূ ফীহা সামিউ লাহা শাহীকাওঁ ওয়া হিয়া তাফূর।যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার গর্জন শুনতে পাবে আর তা ফুঁসতে থাকবে।
Advertisement
(৮)تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
তাকাদু তামাইয়াঝু মিনাল গাইজি কুল্লামা উলকিয়া ফীহা ফাওজুন সাআলাহুম খাঝানাতুহা আলাম ইয়া’তিকুম নাযীর।
ক্রোধে আক্রোশে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই কোন দলকে তাতে ফেলা হবে তখন প্রহরীরা তাদের জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আসেনি?
(৯)قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلالٍ كَبِيرٍ
কালূ বালা কাদ জাআনা নাযীরুন ফাকাযযাবনা ওয়া কুলনা মা নাঝঝালাল্লাহু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা ফী দালালিন কাবীর।
তারা বলবে, হ্যাঁ, আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, আল্লাহ কিছুই নাজিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ।
(১০)وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
ওয়া কালূ লাও কুন্না নাসমাউ আও না‘কিলু মা কুন্না ফী আসহাবিস সা‘ঈর।
আর তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসী হতাম না।
(১১)فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقاً لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ
ফা‘তারাফূ বিযামবিহিম ফাসুহকাল লিআসহাবিস সা‘ঈর।এভাবে তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে; ধ্বংস জাহান্নামের অধিবাসীদের জন্য।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই:১. কাফের বা অবিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন। আখেরাতের জীবনে তারা চিরকালের জন্য জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
২. আল্লাহর কোনো রাসুলকে মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করা কুফরি ও জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। আল্লাহর রাসুলদের না মেনে শুধু আল্লাহর প্রতি ইমান আনা পরকালীন মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়।
৩. কেয়ামতের দিন জাহন্নাম ভয়াবহ গর্জন করতে থাকবে ও ফুঁসতে থাকবে যেন ক্রোধে-আক্রোশে ফেটে পড়ছে।
৪. অবিশ্বাসীরা নবি ও দাঈদের কথা বোঝা ও মানার ইচ্ছা নিয়ে শোনে না। দীনের কথা তারা শোনেই অস্বীকার করার জন্য। কেউ যদি আন্তরিকভাবে বোঝার ইচ্ছা নিয়ে দীনের কথা শোনে, সে হেদায়াত লাভ করে।
ওএফএফ/জিকেএস