দেশজুড়ে

ঋণের চাপে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেন আলী হোসেন

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক নারী ও দুই শিশু সন্তান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলী হোসেন (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তিনি এ হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেল পৌনে ৩টায় জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১২ সালের একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি আলী হোসেন। ওই মামলায় টানা পাঁচ বছর কারাভোগের পর ২০১৭ সালের আগস্টে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর ২০১৯ সালে তার মামাতো বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করে দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। তাদের আবু বকর সিদ্দীক ও আনাস নামের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। তবে চার সদস্যের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো।

আরও পড়ুন

Advertisement

গর্ত থেকে শিশুর মরদেহ টেনে বের করলো শিয়াল, পরে মিললো আরও দুটি

সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ করেন আলী হোসেন। তবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই তাদের অপমান করা হতো। এতে হতাশ আলী হোসেন স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ১৬ মে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে গভীর রাতে স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আলী হোসেন। এরপর মৃত স্ত্রীর ওড়না দিয়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে গর্ত করে পুঁতে রেখে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন বুধবার (২২ মে) ত্রিশাল থানায় মামলা করেন। পরে আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ। বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে আলী হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাইমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফালগুনি নন্দী, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা, জেলা ডিবির ওসি ফারুক হোসেন প্রমুখ।

এর আগে মঙ্গলবার (২১ মে) উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে একটি নির্জন স্থানে কিছু টানাহেঁচড়া করতে দেখা যায় শিয়ালকে। পরে সেখানে মাটি খুঁড়ে এক নারী ও দুই শিশুসন্তানের মরদেহ পান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন আলী হোসেনের স্ত্রী আমেনা খাতুন (৩০), তার দুই শিশুপুত্র আবু বকর সিদ্দীক (৪) ও আনাস (২)।

Advertisement

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস