গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দাবি, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বৈঠক করেছেন বলে স্বীকার করেছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ওই বৈঠক শেষে শফিক রেহমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে যান। কয়েকদিন লন্ডনে থেকে বাংলাদেশে ফেরেন তিনি। লন্ডনে গিয়ে শফিক রেহমান কী করেছেন, কার সঙ্গে দেখা করেছেন সে বিষয়টি এখন যাচাই-বাছাই করছেন তদন্ত কর্মকর্তরা। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘বৈঠকে’ যারা উপস্থিত ছিলেন, তাদের কারো সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কোনো যোগাযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তদন্ত দল।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জাগো নিউজকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে বিএনপি-ঘনিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। ডিবির ডিসি মাশরুকুর রহমান খালেদ জানিয়েছেন, রিমান্ড শেষে শুক্রবার অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে শফিক রেহমানের আরো রিমান্ড চাইবেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের এসি হাসান আরাফাত। লন্ডনে যাওয়ার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে শফিক রেহমান তাদের জানিয়েছেন, লন্ডনে তিনি ঘুরতে গিয়েছিলেন। সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিমান্ডে শফিক রেহমান জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ২৭ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২৯ জানুয়ারি সেখানে ‘বৈঠক’ করেন। ৭-৮ দিন পর তিনি লন্ডন যান। লন্ডনে ২-৩ দিন অবস্থান করেন।বাংলাদেশের পাশাপাশি শফিক রেহমানের লন্ডনের পাসপোর্ট রয়েছে। তাই সেদেশে যেতে তার কোনো ভিসার প্রয়োজন হয়নি। সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গ্রেফতার হওয়া তারেক রহমান ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে লন্ডনে আছেন। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ছাড়াও কয়েক ডজন মামলার আসামি তারেক। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে। শফিক রেহমান লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমান বা বিএনপির অন্য কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কি না, সে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে ডিবি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক শেষে শফিক রেহমান শুধুমাত্র ঘোরাঘুরির জন্য লন্ডন যাওয়ার কথা বলেছেন। আমরা কথা যাচাই-বাছাই করছি। জয়কে অপহরণের পরিকল্পনার কোনো কাজে তিনি লন্ডন গিয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ডিবি দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার দেয়া তথ্যগুলো পাসপোর্ট ও অন্যান্য ডকুমেন্টের সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাকে আবারো রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে। দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’জয়কে অপহরণ চক্রান্তে শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকেও এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডেও চেয়েছে পুলিশ। আগামী ২৬ এপ্রিল রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা রয়েছে। দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলে তাদের মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এআর/এনএফ/এবিএস
Advertisement