বিবিধ

দুই কিডনি বিকল তরুণ শিক্ষক বাঁচতে চান

‘এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে মন যেতে নাহি চায়।’ আসলেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ কঠিন। সবাই বেঁচে থাকতে চায়। যেমনটি চান তরুণ শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান। সুস্থ কিডনি নিয়ে তিনি সবার মাঝে থাকতে চান। কিন্তু বেঁচে থাকার কাজটি যে তার জন্য দিনদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শরীর ও মন আর কিছুতেই সাঁয় দিচ্ছে না। তার সঙ্গে বিশাল আর্থিক টানাপড়েন তো রয়েছেই। মাঝখানে কিছুদিন ভালোবোধ করলেও সম্প্রতি তিনি আবারও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। ডাক্তাররা তাকে বাঁচাতে দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। আর এজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ (প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা) যা তার একার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।

Advertisement

মেহেদীর জীবন যুদ্ধের গল্প নতুন নয়। ছোটবেলা থেকেই কারো বিপদ দেখলে নিজের সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। অথচ আজ তার নিজেরেই সাহায্য প্রয়োজন। নিজ গ্রামে শিশুদের মাঝে আলা ছড়িয়ে দিতে দায়িত্ব নিয়েছিলেন একটি অটিজম স্কুলের। সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের মধ্যে নিজেকে খুঁজেও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিডনি রোগ তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। যে বয়সে একজন তরুণের চোখে মুখে স্বপ্ন থাকে, সেই বয়সে বেঁচে থাকার চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ-ভারতের হাসপাতালগুলোতে ছোটাছুটি করছেন তিনি। আর গত কয়েক বছরে এমন দৌড়ঝাঁপ করতে করতে খুইয়েছেন নিজের সহায় সম্বল সবটুকু।

এর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে ৪০ বার ডায়ালাইসিস করতে হয়েছে তাকে। ডায়ালাইসিসের শারীরিক ধকল তিনি আর নিতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে শরণাপন্ন হন ভারতের চেন্নাইয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের। সেখানে ডাক্তাররা সবকিছু দেখে শুনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছয়মাসের ওষুধ দেন। এভাবে ওষুধে ওষুধে কেটে যায় আরও দুই বছর। এই সময়টাতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও বর্তমানে উচ্চরক্তচাপজনিত কারণে রক্তের ক্রিয়েটিনিন বিপদজনক মাত্রায় উঠেছে। ফলে বিপদ আসন্ন এটা বোঝা যাচ্ছে। এমন নানা অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে মেহেদীর।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে মেহেদী জানেন না তার এই সংগ্রামের শেষ কোথায়। তারপরও হাল ছেড়ে দিতে চান না তিনি। সংগ্রামটা চালিয়ে যেতে চান। তার এই সংগ্রামের সঙ্গে এবার অন্যরাও এগিয়ে এসেছেন। এজন্য তিনি সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বানদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।

Advertisement

আইএইচআর/জেডএইচ/জেআইএম