অর্থনীতি

শেষের ধাক্কায় টিকলো না শুরুর বড় উত্থান

আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের (আএসটিসিএল) ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে সিকিউরিটিজ কেনার সীমা ৪০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা করার খবরে মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হলেও শেষ পর্যন্ত তা টেকেনি।

Advertisement

বরং লেনদেনের শেষদিকে একশ্রেণির বিনিয়োগকারী বাজারে মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ান। তাদের বিক্রির চাপের ধাক্কা শেয়ারবাজার সামলাতে পারেনি। ফলে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষে হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ৮ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।

শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতন হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যার দিকে আইসিবি সিকিউরিটিজের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সই করা নির্দেশনায় জানানো হয়, আইসিবি সিকিউরিটিজের নন-মার্জিন লিমিট ১০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বা আইসিবি সিকিউরিটিজ স্টক এক্সচেঞ্জকে করপোরেট গ্যারান্টি দেবে।

Advertisement

নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে এমন নির্দেশনা আসার পর মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান হয়।

লেনদেনের এক পর্যায়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৯১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এর পরেই হঠাৎ বিক্রির চাপ বাড়ান একশ্রেণির বিনিয়োগকারী। তাদের বিক্রির চাপ এতটাই ছিল, তা সামাল দিতে পারেনি বাজার। মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে।

লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এ বিক্রির চাপ। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৭১ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

Advertisement

সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৯১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৬১ কোটি ২১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেস্ট হোল্ডিং, বিচ হ্যাচারি, ই-জেনারেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, আইসিবি এএমসিএল, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭০ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

এমএএস/এমআইএইচএস/এএসএম