২৩ বছরের বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক শাসনের জেরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা পায় তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান। জন্ম নেয় নতুন দেশ বাংলাদেশ। সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানের বহু রাজনীতিক স্বীকার করছেন দেশটির তৎকালীন শাসকদের করে যাওয়া ভুল রাজনীতি ও নিজেদের নাগরিকদের ওপর বৈষম্য ও নিপীড়নের কারণেই এমনটি ঘটেছিল। যদিও বাংলাদেশ স্বাধীনের শেকড় ছিল আরও গভীরে। তবে সেই সব বিষয় নিয়ে কি আদৌ ভাবছে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী? এমন প্রশ্নের উত্তর হবে, ‘না’।
Advertisement
সবচেয়ে বড় কথা, একটি ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। তারা নিজেদের বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। ফলে তাদের দেশের অভিজাত শ্রেণি ও ডিপ স্টেটের বাইরের সবাই এখনও নির্যাতিত। আর এটির সবচেয়ে বড় প্রমাণ এখনও জ্বলছে বেলুচিস্তান ও আজাদ কাশ্মীর। আর দুটি ভূখণ্ডই বাংলাদেশের পথ ধরে চাইছে স্বাধীনতা।
২০২০ সালে পাককিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নির্বাসিত নেতা সর্দার শওকত আলি কাশ্মীরীর একটি বক্তব্য ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ওই বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষজনকে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করার সুযোগ দেয়নি সেদেশের সরকার। ১৯৪৭ সালে কাশ্মীর পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা চেয়েছিল। ওই বছর ২২ অক্টোবর কাশ্মীরে হামলা করে পাকিস্তান। তার পর থেকে সেখানে দখলদারিত্ব চলছে।
এটি শুধু শওকত আলি কাশ্মীরীর কথা নয়। বরং ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ যেন এমন মননই ধারণ করেন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে উপমহাদেশের প্রায় সব অঞ্চল ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে পার্শ্ববর্তী জম্মু-কাশ্মীরকে কোনো দেশের সঙ্গে যেমন যুক্ত করা হয়নি। এটিকে স্বাধীন কোনো দেশ বলেও ঘোষণা করা হয়নি। ওই বছরই পাকিস্তানি সৈন্যরা কাশ্মীরে প্রবেশ করে কাশ্মীর দখল করতে। তখন কাশ্মীরের রাজা আত্মরক্ষার্থে ভারতের সাহায্য চান।
Advertisement
ভারত সাহায্যের শর্ত হিসেবে জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের সাথে যুক্ত করার প্রস্তাব দেয়। কাশ্মীরের রাজা তাতে রাজি হন। এরপর ভারতীয় সৈন্যরা কাশ্মীরে ঢুকে সেখান থেকে পাকিস্তানিদের তাড়াতে। প্রায় বছরখানেক সময় যুদ্ধ করে ভারত জম্মু-কাশ্মীরের তিন ভাগের দুভাগ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় আর পাকিস্তানের ভাগ্যে জুটে তিন ভাগের এক ভাগ।
পাকিস্তান সেই এক ভাগের নাম দেয় আজাদ কাশ্মীর বা স্বাধীন কাশ্মীর। পাকিস্তানিরা চায় এটিকে জোর করে দখলে রাখতে। কাশ্মীরে একটা যুদ্ধ অবস্থা জারি রেখে নিজেদের আখের গোছানোয় মত্ত তারা।তাই তারা সন্ত্রাসবাদকে পুঁজি করেছে, অনেক স্বাধীনতাপন্থী কাশ্মীরিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বানিয়েছে। ফলে কাশ্মীরিদের চাওয়া পূরণ হচ্ছে না। পাকিস্তানের সরকার বরাবরই কাশ্মীর আন্দোলন দমন করতে চেয়েছে কঠোর হস্তে।
ভারত ও পাকিস্তানের অধিকৃত উভয় কাশ্মিরেরই স্বাধীনতার দাবিতে কাজ করা জম্মু ও কাশ্মির লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) ২০১৯ সালে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে অন্তত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। এছাড়াও আজাদ কাশ্মীরে নিয়মিত লেগে আছে সহিংসতা। ২০২৩ সালে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হঠাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য গম, আটা এবং বিদ্যুতের দাম বেড়ে যায়। মূল্যবৃদ্ধির জেরে জীবনযাপনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খায় মানুষ। একপর্যায়ে দাম কমানোর দাবিতে গত বছরের মে মাসে আন্দোলন শুরু করে আজাদ কাশ্মীরের জনগণ। তাদের নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় সংগঠন জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেএএসি)। গত ১৪ মে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের গুলিতে নিহত হন তিন কাশ্মীরি।
মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার থেকে জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির (জেএএসি) নেতৃত্বে আজাদ কাশ্মীরের হাজার হাজার বাসিন্দা প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে আসছে। পাঁচ দিন ধরে চলা এ প্রতিবাদের মধ্যে এ পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি গম-আটায় ভর্তুকি দেওয়া, বিদ্যুতের দাম কমিয়ে উৎপাদন খরচের সমান করা, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আর্থিক ব্যবস্থা সমন্বয়ে উন্নতিসাধনসহ ১০ দফা দাবি সরকারের কাছে পেশ করে আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দারা।
Advertisement
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৯টি দাবিই পূরণের আশ্বাস দেয় পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর সরকার। কিন্তু তার কোনও প্রতিফলন গত তিন মাসে দেখেনি উপত্যকার মানুষ। জেএএসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদ্যুতের দাম কমানো ছাড়া বাকি ৯টি দাবি বাস্তবায়নে রাজি হয় সরকার। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি আন্দোলনকারীরা। এরই জেরে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে উত্তেজনা হঠাৎ বেড়ে যায়।
জেএএসির নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মধ্যে সম্প্রতি তাদের কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে ১০ মে ধর্মঘটের ডাক দেয় জেএএসি। পরদিন ১১ মে আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফ্ফারাবাদ অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করে আঞ্চলিক সরকার। শনিবার রাজধানী অভিমুখে লং মার্চ শুরুর প্রথম দিন আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাধে।
পাকিস্তানের মানুষের ন্যায় দুর্ভোগে রয়েছে বেলুচিস্তানের মানুষ। চীনের কনস্যুলেটে হামলা দুঃখজনক কিন্তু বেলুচিস্তানের মানুষের দুর্ভোগের অভিযোগকে সবসময় উপেক্ষা করা যায় না। এ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে স্বাধীনতার পথে কি এগোচ্ছে বেলুচিস্তান? আর বেলুচিস্তানের পথ ধরেই স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আজাদ কাশ্মীরও?
এসব ঘটনায় নাগরিক সমাজের ভাষ্য, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বরাবরের মতোই বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক আচরণ দেখাচ্ছে নিজেদের নাগরিকদের ওপর। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে সাম্প্রতিককালে এরই উদাহরণ হিসেবে ১৯৭১ সালের আগে পূর্ব পাকিস্তানে এভাবে একে একে নানা প্রতিবাদ গড়ে উঠছিল বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে, এসব প্রতিবাদ দমনে শাসক গোষ্ঠীর কঠোরতার কথা। ফলে ক্রমেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে স্বাধীনতা আন্দোলন।
সাম্প্রতিককালে সেই আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে স্বাধীনতা ও ন্যায্য অধিকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বেলুচিস্তান, সিন্ধু এবং পাকিস্তানের দখল করা কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। আর এই দাবিকে প্রতিহত করতে সামরিক বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী এবং জঙ্গিদের ব্যবহার করছে পাকিস্তান। ২০২১ সালে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে কোনো গণমাধ্যমই স্বাধীন নয় এবং সেখানে গুমের ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক তাহা সিদ্দিকি এক প্রতিবেদনে লিখেন, পাকিস্তানের দখলকৃত কাশ্মীরে কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই। এছাড়া জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের মতো যে সব দল আজাদ কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করছে তাদেরকেও দমিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ।
এছাড়া পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কাশ্মীরের কোনো রাজনৈতিক দল অংশ নিতে পারে না। ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলই সেখানে শাসন চালায়। ২০২১ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর আজাদ কাশ্মীর আন্দোলন আরও একবার বড় গতি পায়। ওই সময় আজাদ জম্মু-কাশ্মিরে যাওয়ার এক বিরল সুযোগ পান মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক সাংবাদিক।
সরেজমিনে তিনি দেখতে পান, ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতাপন্থী আন্দোলন দমনে পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। ওই সময় এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এক সময় স্বাধীনতাপন্থী বিক্ষোভে অল্প কিছু মানুষ জড়ো হতো। কিন্তু এখন এসব বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। সাম্প্রতিককালে কাশ্মিরিরা সীমান্তের দিকে বিক্ষোভ করতে গিয়েছিলেন। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। আজাদ কাশ্মিরের রাজনৈতিক নেতারা সীমান্তের দিকে মিছিল না নিয়ে যেতে আহ্বান জানানোর পরও কাশ্মিরিরা বিক্ষোভ করেন।
কাশ্মিরের সাবেক এক সশস্ত্র স্বাধীনতাপন্থী পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কাশ্মিরিদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে কলঙ্কিত করেছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করানোর মাধ্যমে। লস্কর-ই-তৈয়বার মতো সংগঠনগুলো ভারতের পার্লামেন্ট ও মুম্বাইয়ে হামলা চালিয়েছে। ওই স্বাধীনতা সংগ্রামী বলেন, আমরা ছিলাম মুক্তিযোদ্ধা, আমরা কাশ্মিরেরই মানুষ ছিলাম। কিন্তু পরে পাকিস্তান লস্কর-ই-তৈয়বাকে আমাদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করায়। মানুষ আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। মুজাফ্ফরাবাদে কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের কার্যালয় মে মাস থেকে বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ।
আজাদ কাশ্মিরের সাবেক প্রধান বিচারপতি মানুজর গিলানি বলেন, একসময় জিহাদ ছিল জীবনের অংশ। এখন সব টম, ডিক ও হ্যারি দাঁড়িয়ে যায় এবং বলে তারা জিহাদে যাবে। এখন জিহাদিদের সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে। এক সময় তারা পাকিস্তানের স্বার্থে কাজ করত। কিন্তু এখন পাকিস্তান মনে করে এই পন্থা খারাপ। হিজবুল মুজাহিদিনের রাজনৈতিক শাখা মনে করা হয় জামাত-ই-ইসলামিকে। দলটির সাবেক প্রধান আব্দুল রশিদ তুরাবি দাবি করেন, তারা এখনও শান্তি চায়। সংলাপই সবার অগ্রাধিকারে রয়েছে।
তিনি বলেন, সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের সময় কমে যাচ্ছে এবং অনেকেই আর থেমে থাকতে রাজি না। একই অবস্থা আরেক প্রদেশ বেলুচিস্তানের। গত ৭০ বছর ধরে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায় বেলুচিস্তান অবহেলিত। ১৯৪৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বেলুচিস্তানের পার্লামেন্ট পাকিস্তানের সঙ্গে একত্রিতকরণের বিরোধিতা করে। কিন্তু ১৫ এপ্রিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রদেশটি জবরদখল করে। পাকিস্তানের সমগ্র ভূখণ্ডের ৪৬ শতাংশ বেলুচিস্তানে। সবচেয়ে বড় প্রদেশ হলেও এর জনসংখ্যা পাকিস্তানে সবচেয়ে কম। পাকিস্তানের ৪০% মানুষ পশতুন। সরকারি বিধি ব্যবস্থায় বৈষম্য এবং দারিদ্র্যের কারণে ক্ষুব্ধ বেলুচিস্তানের মানুষ। বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বেলুচিস্তানের মানুষ খুবই দরিদ্র। মাত্র ২৫% মানুষ সেখানে শিক্ষিত। অথচ পাকিস্তানে শিক্ষার হার শতকরা ৪৭%। বেলুচিস্তানের বেকারত্বের হার ৩০%।
পাকিস্তানের এক তৃতীয়াংশ গ্যাসের মজুদ বেলুচিস্তানে কিন্তু অল্প কয়েকটি শহরে বিদ্যুত্ সরবরাহ আছে। বেলুচদের অভিযোগ, বেশিরভাগ পরমাণু পরীক্ষা বেলুচিস্তানে চালানো হয়। তাদের খনিজ সম্পদ ব্যবহূত হচ্ছে পুরো পাকিস্তানের অগ্রগতিতে। এ বৈষম্যের সর্বশেষ নমুনা গোয়াদার বন্দর। প্রদেশটির হাজার হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে অথচ বালুচদের সেখানে সম্পৃক্ত করা হয়নি। প্রথম থেকেই বৈষম্য চলছে এই প্রদেশটির ব্যাপারে। শের মোহাম্মদ মারির নেতৃত্বে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত আন্দোলন করে বেলুচিস্তানের কয়েকটি উপজাতি।
১৯৬৭ সাল থেকে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে বালুচ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন। সম্প্রতি বেলুচদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানকার মাদ্রাসাগুলোতে ঢুকে পড়ছে তালেবান। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বেলুচিস্তানের ৪০ হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছে এবং ১০ হাজার মানুষ খুন হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর করাচিতে চীনের কনস্যুলেটে বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলা সারা দুনিয়ার মানুষের নজরে আসে।
যদিও বেলুচিস্তান লিবোরেশন আর্মি বেলুচিস্তানের খনিজ সম্পদের ব্যাপারে চীনের কর্তৃপক্ষকে আগেই সতর্ক করেছে। কারণ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সেখানকার বিভিন্ন জায়গাকে টার্গেট করছে। ১৯৪৭ থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের ন্যায় দুর্ভোগে রয়েছে বেলুচিস্তানের মানুষ। চীনের কনস্যুলেটে হামলা দুঃখজনক কিন্তু বেলুচিস্তানের মানুষের দুর্ভোগের অভিযোগকে সবসময় উপেক্ষা করা যায় না। এ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে স্বাধীনতার পথে কি এগোচ্ছে বেলুচিস্তান? আর বেলুচিস্তানের পথ ধরেই স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আজাদ কাশ্মীরও?
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
এইচআর/জেআইএম