ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এখনো তার কোনো হদিস মেলেনি। তার ব্যবহৃত ভারতীয় নম্বরের সর্বশেষ অবস্থান ভারতের ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এক এলাকায়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (সাউথ জোন) অনুপম সিং।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘নিখোঁজ সম্পর্কিত যে অভিযোগপত্রে সংসদ সদস্যের যে দুটি মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল সেই নম্বর ট্রেস করে ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী অঞ্চল মুজাফফরাবাদ অর্থাৎ উত্তর প্রদেশে তার লোকেশন পাওয়া যায়। এছাড়া যে গাড়িতে ওই সংসদ সদস্য উঠেছিলেন সেই গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসা করেও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু জানাতে চাননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
সোমবার (২০ মে) এমপি আনোয়ারুল আজিমের দীর্ঘদিনের পরিচিত বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে তাকে ডাকা হলে একজন বেরিয়ে এসে নিজেকে গোপালের কর্মচারী পরিচয় দেন। তিনি বলেন, গোপাল বাবু অসুস্থ এখন কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। আবার কখনো বলছেন, গোপাল বাবু বাড়িতে নেই।
তবে বরানগর থানার অন্তর্গত ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দারা জানান, গোপাল বিশ্বাস বাড়িতেই আছেন। কয়েকদিন ধরে তাকে বাড়ির বাইরে দেখা যাচ্ছে না।
Advertisement
একজন সংসদ সদস্য আটদিন ধরে নিখোঁজ বিষয়টি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ গুরুত্বসহ দেখছে। সোমবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্টেলিজেন্ট ব্যুরোর (আইবি) আধিকারিকদের গোপাল বিশ্বাসের মন্ডলপাড়ার বাড়ির আশপাশে দেখা গেছে।
গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার অন্তর্গত ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দা এমপি আনোয়ারুলের দীর্ঘদিনের পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন তিনি। মূলত চিকিৎসক দেখানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ওই বন্ধুর বাড়িতে আসেন এমপি আনোয়ারুল।
পরদিন ১৩ মে দুপুরে চিকিৎসক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। উল্টে দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে জানান তাকে আর ফোন করতে হবে না, দরকার হলে তিনি ফোন করেন গোপাল বিশ্বাসকে। কিন্তু এরপর থেকে আর কোনোভাবেই তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছাড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই কোনো উপায়ান্তর না দেখে গত ১৮ মে শনিবার বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস। অভিযোগ পেয়ে বরানগর থানা তদন্তে নামে।
কিন্তু নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এদিকে সোমবারও গোপাল বিশ্বাসের ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল নম্বরে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো উত্তর মেলেনি। এ সংসদ সদস্য কোথায় আছেন তা এখনো অনিশ্চিত।
Advertisement
রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এ সংসদ সদস্যের হদিস পেতে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারাও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
ডিডি/এমএএইচ/