আন্তর্জাতিক

ইব্রাহিম রাইসির উত্তরসূরি কে এই মোহাম্মদ মোখবের

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মোহাম্মদ মোখবের। দুই মাস দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। বলা হচ্ছে, তিনিই হতে যাচ্ছেন ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আসুন জেনে নেওয়া যাক কে এই মোহাম্মদ মোখবের।

Advertisement

মোখবেরের জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইরানের দক্ষিণাঞ্চল প্রদেশ ডেজফুল শহরে। আন্তর্জাতিক আইনে পিএইচডি ডিগ্রিধারী এই নেতা অত্যন্ত চৌকস ও অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপক হিসেবে পরিচিত। একপর্যায়ে তিনি ইরানের রাজনীতিতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। রাইসির মতো মোখবেরকেও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়।

২০২১ সালের আগস্টে ইব্রাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মোখবেরকে ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট করা হয়। এর আগে তিনি সর্বোচ্চ নেতা খামেনির আদেশ কার্যকর করার জন্য গঠিত সেতাদ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ইংরেজিতে সেতাদকে বলা হয় হেডকোয়ার্টার্স ফর দ্য এক্সিকিউশন অব ইমাম খামেনি’স অর্ডার।

মোখবের ২০০৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৪ বছর সেতাদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়কালের মধ্যে তিনি সমাজকল্যাণে এমন সব কাজ করেন, যা তাকে ইরানজুড়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। সেতাদের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি বারাকাত ফাউন্ডেশন, এহসান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন ও করোনা মহামারি চলাকালে তিনিই প্রথম ইরানি ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: 

আকাশ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও যেসব নেতা হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আর কে কে ছিলেন? কীভাবে বিধ্বস্ত হলো ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার?

সেতাদের আগে, মোখবের সিনা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পাশাপাশি দক্ষিণ ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুটি পদেই সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাই শীর্ষস্থানীয় ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় মোখবেরকে বিশেষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বলে বিবেচনা করা হয়।

সেতাদে কাজ করার সময় ২০১০ সালে মোখবেরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে দুই বছর পর তার ওপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

শনিবার (১৮ মে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে আজারবাইজান সফরে যান ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি। রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: 

ইরানি প্রেসিডেন্টের মরদেহ উদ্ধার কপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানি প্রেসিডেন্ট নিহত, মুসলিম বিশ্বে শোক প্রেসিডেন্ট রাইসির বর্ণাঢ্য জীবন প্রেসিডেন্ট রাইসি নিহত, ইরানে পাঁচদিনের শোক ঘোষণা

সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সফরসঙ্গীরা। তাদের সঙ্গে আরও দুটি হেলিকপ্টার ছিল।

পথিমধ্যে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছাকাছি দুর্গম পাহাড়ে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। তবে অন্য হেলিকপ্টার দুটি নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়। সোমবার (২০ মে) সকালে ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম প্রেসটিভি, আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ, তাসনিম নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা সবার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোখবের সংসদের স্পিকার ও বিচার বিভাগের প্রধানসহ তিন সদস্যের কাউন্সিলের অংশ, যা ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করবে।

সূত্র: প্রেস টিভি

এসএএইচ