ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গুটি জাতের আম নামানো হলেও বাজারে দেখা মিলছে না। গত বুধবার (১৫ মে) থেকে গাছ থেকে গুটি জাতের আম পাড়া শুরু হয়। অপরিপক্ব আম নামাতে অনীহা বাগান মালিকদের।
Advertisement
এর আগে গত ১২ মে (শনিবার) আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত সভায় ম্যাংগো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, গোপালভোগ, লখনা বা লক্ষণভোগ ও রানীপছন্দ আম সংগ্রহ করা যাবে ২৫ মে, হিমসাগর ও খিরসাপাত ৩০ মে, ল্যাংড়া ও ব্যানানা আম ১০ জুন, আম্রপালি ও ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বারি আম-৪ ৫ জুলাই, আশ্বিনা ১০ জুলাই ও গৌড়মতি ১৫ জুলাই থেকে নামাতে পারবেন বাগান মালিকরা। তবে সবার শেষে ২০ আগস্ট থেকে বাজারে পাওয়া যাবে ইলামতি জাতের আম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে। এ বছর জেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৩১৫ মেট্রিক টন।
এদিকে রাজশাহীর অন্যতম আমের হাট জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজার। এ হাটেও শুরু হয়নি আম বেচাকেনা। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আম পরিপক্ব হতে সময় লাগছে। হাটগুলো জমতে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত ১০ দিন।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা যায়, পাকা আম না থাকলেও কাঁচা বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। দুয়েকজন বিক্রেতা সাতক্ষীরা থেকে আনা পাকা আম বিক্রি করছেন। তবে আমের ব্যবসা জমতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন আড়তদাররা।
রাজশাহীর সাহেব বাজারের আম ব্যবসায়ী শাহিন ইসলাম বলেন, গুটি আম পাড়া শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও পাই নি। আরও ১০ দিনের মতো সময় লাগবে। এবার গাছে পাকতেই একটু দেরি হচ্ছে। পুরোপুরি পরিপক্ব হলেই নিয়ে আসবো। গতবার আম একটু বেশি ছিল, এবার একবারেই আম কম। তাই দামটাও একটু বেশি হবে।
রাজশাহীর অন্যতম আম উৎপাদনকারী উপজেলা বাঘার আম চাষি সোহান ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের ডেটে তো আর আম পাকে না। তাদের তারিখে গুটি আম পাকেনি। তবুও কেউ কেউ পাড়া শুরু করেছে। আরও ১০ দিনের মতো সময় হলে আমটা ভালোভাবে বাজারে দেওয়া যাবে।
আমের আড়ৎদার রায়হান আলী বলেন, আরও তিনদিন পর আম পাওয়া যেতে পারে। আম পুষ্ট কম হয়েছে। আরেকটু পুষ্ট হলেই পাওয়া যাবে। সামনে সপ্তাহে আম ভালোভাবে পাওয়া যাবে। তবে এবার আমের দাম একটু বেশিই হবে।
Advertisement
বানেশ্বর হাট ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমের হাট এখনও লাগেনি। জ্যৈষ্ঠ মাস পার হচ্ছে। গুটি আম কিছু আসার কথা। কিন্তু সেই আম তো দেখতে পাচ্ছি না। আর এমনিতেই এবার আমের পরিমাণ কম। গাছে শুধু পাতা, আম নেই। অন্যবারের তুলনায় এবার চার ভাগের একভাগও বিক্রি হবে কিনা সন্দেহ।
রাজশাহীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে ছালমা বলেন, জেলায় বাণিজ্যিক চাষি বেশি। তারা গুটি আম খুব একটা হার্ভেস্ট করে না। খুব বেশি যে গুটি আম চাষ হয় সেটাও না। এখানে যা হয় ব্রান্ডের আম। আর ম্যাংগো ক্যালেন্ডার সবার সর্বসম্মতিক্রমেই ঘোষণা করা হয়েছে। আর একই জাত বা গাছের আম একেক সময় পাকে। যার গাছের আম পরিপক্ব সে বাড়বে। বলাই আছে অপরিপক্ব আম পাড়া যাবে না।
সাখাওয়াত হোসেন/আরএইচ/জেআইএম