রাজনীতি

বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবো: অলি

যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি। শনিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পার্টির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ।

Advertisement

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বিএনপির নেতৃত্বে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবো। সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বাকশালী সরকারের পতন হবে। দেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।

অলি আরও বলেন, আমরা জানি ভারত সরকার তাদের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমরা অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে নাক গলাতে চাই না, অন্য দেশের কোনো ক্ষতি হোক এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে চাই না। কারণ, এ ধরনের কর্মকাণ্ড ইসলাম ধর্মের পরিপন্থি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভারত সরকার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকবে বরং ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব স্থাপনে মনযোগী হবে। আসুন, আমরা একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করি। ভালো প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করি। এতেই সবার মঙ্গল নিহিত।

Advertisement

বিএনপির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে এলডিপিও। এই প্রথমবারের মতো এলডিপির সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অলি আহমদের পাশেই বসা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানেরও থাকার কথা ছিল। কিন্তু তার স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি যোগ দেননি বলে জানানো হয়।

ভারত সরকারের উদ্দেশে অলি আহমদ আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণ প্রায় ১৮ কোটি। ভারত সরকারের উচিত হবে না বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে শত্রুতামূলক আচরণ করা। আমরা সুপ্রতিবেশী হিসেবে থাকতে চাই। বর্তমান সরকার আপনাদের আমাদের দেশের সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর এবং বিভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। অনেকগুলো অসম চুক্তিতে সই করেছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। তারপরও কেন ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে, তা বোধগম্য নয়।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ভারতের কংগ্রেসের সভাপতি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন- আমরা পাকিস্তানকে দুই টুকরা করে তাদের দুর্বল করে দিয়েছি। তার এই বক্তব্যে সুস্পষ্ট বুঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের বন্ধু নয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৯৪৭ সালের পর উপমহাদেশ ত্যাগ করে নিজ দেশে ফিরে যায়। বিগত কয়েক বছর যাবৎ ভারত সরকার বাংলাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুরূপ দায়িত্ব নিয়েছে। আমরা তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো বিরূপ মন্তব্য নেই। এছাড়াও অন্যের ক্ষতি করা ইসলাম ধর্ম পরিপন্থি একটি কাজ।

সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ দেশে আইনের শাসন, অর্থনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘দেশে লুটতরাজের কারণে প্রবাসীরা রেমিট্যান্সের টাকা পাঠানো থেকে বিরত রয়েছেন। ডলার সংকট এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য মেগা প্রকল্পগুলো অনেকাংশে দায়ী। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আশঙ্কাজনক হারে প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে এবং দেশীয় মুদ্রার তারল্য সংকট প্রতীয়মান। খুব শিগগির এই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো পথ খোলা নেই।

Advertisement

অলি বলেন, ‘বর্তমান অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে বাধ্য। হয়তো নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেতে পারে। আমাদের সবার উচিত, দেশের সমস্যাগুলো পর্যালোচনা করা এবং যত দ্রুত সম্ভব এগুলোর সমাধান বের করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি প্রমুখ।

কেএইচ/জেডএইচ/জেআইএম