রাজনীতি

যতই চাপ আসুক সংবিধানের বাইরে যাবে না আওয়ামী লীগ: কাদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি কোনো শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যত ষড়যন্ত্র হোক, বিদেশি শক্তির চাপ আসুক সংবিধানের বাইরে যাবে না আওয়ামী লীগ।

Advertisement

ওবায়দুল কাদের আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল বলেন-আমাদের নাকি প্রতিবেশী দেশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফখরুল সাহেব শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের জন্মের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি জয় বাংলার চেতনা। আমাদের দেশি বিদেশি কোনো শক্তি নয় নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের সংবিধান। এই সংবিধানের বাইরে আমরা যাবো না। আজ যত ষড়যন্ত্রই করুক, যত বিদেশি শক্তির নামে হুমকি-ধমকি দিতে পারেন শেখ হাসিনা আজকে যিনি মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয় গান গেয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন তিনি কোন পরাশক্তি, বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না। তিনি পরোয়া করেন বাংলার জনগণকে।

এসময় বন্দিমুক্তি নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, মির্জা ফখরুল ২৮ অক্টোবর পালিয়ে গিয়ে এখন বেসামাল হয়ে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করছে। আমি তাকে বলতে চাই-বন্দী মুক্তির কথা বলেন! লজ্জা করে না! জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের ৬২ হাজার নেতাকর্মীকে জেলে রেখেছিলেন। আপনাদের কতজন? আমাদের তিন হাজার নেতাকর্মীকে গুম করে হত্যা করেছিলেন জিয়াউর রহমান ৭৫’র পর বিভিন্ন কারাগারে আটক সামরিক বাহিনীর এগারশ অফিসারকে জিয়াউর রহমান নাস্তা খেতে খেতে ফাঁসি দিতেন।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, অনেকে বলেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এটা সত্যি নয়। ১১ হাজার স্বাধীনতা বিরোধী কারাগারে ছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তাদের মুক্তি দেন। এর মধ্যেও মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিল ৭১৩ জন। সেই ইতিহাস কি ভুলে গেছেন? কথায় কথায় বিএনপি গুম খুন কারাগারের কথা বলে। এসময় নিজেদের ভেতরে শত্রুতা না করে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান দলের সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। সবচেয়ে বিচক্ষণ নেতা, দক্ষ প্রশাসক এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ও সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের রূপকার। বঙ্গবন্ধু হলেন পয়েট অফ পলিটিক্স, আর শেখ হাসিনা হলেন ম্যাজিসিয়ান অফ পলিটিক্স। এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশে আজকে যে ছবি দৃশ্যমান শেখ হাসিনা ম্যাজিক এর পেছনে কাজ করেছে।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে বলব মুক্তিযুদ্ধের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধের প্রত্যাবর্তন। আমাদের গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন যে গণতন্ত্রকে শেখ হাসিনা লড়াই সংগ্রাম করে শৃঙ্খলমুক্ত করেছিলেন। এত অর্জন এত পরিবর্তন এই দেশে, ৭৫ পরবর্তী ইতিহাসে কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কবি নির্মলেন্দু গুণ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাছান মাহমুদ, মাহবুবুল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজির আহমেদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার আলিমের কন্যা ডাক্তার নুজহাত, শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ।

বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা সেদিন সামরিক স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে স্বদেশে ফিরে এসেছিলেন বলে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বক্তারা শেখ হাসিনা নেতৃত্বেই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সকল বাধা এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Advertisement

এসইউজে/এমএএইচ/জিকেএস/এমআইএইচএস