খেলাধুলা

হতাশ, হতভম্ব ও ক্ষুব্ধ আবাহনী সমর্থকরা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ শিরোপা ২০১৭-১৮ মৌসুমে। ফেডারেশন কাপের সর্বশেষ শিরোপা ২০১৮ সালে এবং স্বাধীনতা কাপের সর্বশেষ শিরোপা ২০২১ সালে। ঘরোয়া ফুটবলে বিগত কয়েক বছরে আবাহনীর অর্জন এতটুকুই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টানা পাঁচ মৌসুমে ব্যর্থ।

Advertisement

শীর্ষ ফুটবলে ওঠার পর বসুন্ধরা কিংস ট্রফি জিতেছে ১০টি। ওই সময়ে আবাহনীর ঘরে গেছে ফেডারেশন কাপের দুটি ও স্বাধীনতা কাপের একটি ট্রফি। আকাশি-নীলদের বড় ব্যর্থতা প্রিমিয়ার লিগে।

সবচেয়ে বেশি ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটি কিছুতেই পুনরুদ্ধার করতে পারছে না লিগ শিরোপা। গত মৌসুমে ট্রফিশূন্য ছিল। এবারও তাই। টানা দুই মৌসুমে কোনো ট্রফি জিততে পারেনি আবাহনী, তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেনা দলটির সমর্থকরা।

স্বাধীনতা কাপের সেমিইনাল থেকে লজ্জাজনক বিদায়। কিংসের কাছে ৪-০ গোলে হার। লিগের শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পর সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল ফেডারেশন কাপ ঘিরে। সেখানেও চরম ব্যর্থ।

Advertisement

আবাহনীকে আরেকবার লজ্জা দিয়েছে কিংস। সেমিফাইনালে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শূন্যহাতে মৌসুম শেষ করতে বাধ্য করেছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এ ক্লাবটিকে।

মঙ্গলবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে উড়ে গেছে আবাহনী সমর্থকদের সব আশা-ভরসা। এক মৌসুমে দুই সেমিফাইনালে কিংসের কাছে ৭ গোল (৪+৩) হজম আত্মমর্যাদায় লেগেছে আবাহনী সমর্থকদের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ১০ বার। ৮ বারই হেরেছে আবাহনী কিংসের কাছে। ড্র করেছে দুটি ম্যাচ। এমন ফলাফলে সমর্থকরা রীতিমত হতাশ, হতভম্ব ও ক্ষুব্ধ।

ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালের পর থেকেই আবাহনীর সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ক্ষোভ ঢালতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাদের ক্ষোভের লক্ষ্য আবাহনীর কর্মকর্তারা।

টিম ম্যানেজমেন্ট, এমনকি পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবি পর্যন্ত উঠেছে অনেকের মন্তব্যে। আগামী মৌসুমে আরো ভালো দল গঠন করে লিগসহ অন্যান্য টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার প্রস্তুতির দাবিও উঠেছে সমর্থকদের কাছ থেকে।

Advertisement

তবে আবাহনী আগামী মৌসুমে কেমন দল গড়বে তা নিয়ে কোনো আভাস পাওয়া গেলো না দলের ম্যানেজার নজরুল ইসলামের কথায়। মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে কিংসের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া আবাহনী গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরেনি। কারণ, শুক্রবার লিগের ম্যাচ আছে ওই ভেন্যুতে ব্রাদার্সের বিপক্ষে।

নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকা যাওয়া-আসা করলে খেলোয়াড়দের ওপর দিয়ে আরো ধকল যাবে। এমনিতেই ঘনঘন ম্যাচ খেলতে হচ্ছে তাদের। তাই আমরা গোপালগঞ্জে রয়ে গেছি। ব্রাদার্সের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে ফিরবো। আমাদের সামনে এখন লক্ষ্য শেষ তিনটি ম্যাচ জেতা। জিতলে রানার্সআপ হওয়ার সুযোগ থাকবে। ব্রাদার্স, চট্টগ্রাম আবাহনীর পর ২৯ মে শেষ ম্যাচ মোহামেডানের বিপক্ষে।’

নতুন মৌসুম নিয়ে কী ভাবছে ক্লাব? আবাহনী ফুটবল দলের ম্যানেজার বলেন, ‘আবাহনী তো সবসময়ই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল গড়ে। আগামী মৌসুমেও সেভাবে গড়া হবে। তবে দলটি ঠিক কেমন হবে এখন বলা সম্ভব না। কারণ, তিনটি ম্যাচ এখনো বাকি আমাদের। লিগ শেষ হলেই পরের মৌসুম নিয়ে আলোচনা হবে। তবে, ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আবেদন থাকবে আরো ভালো মানের বিদেশি আনা।’

‘এই জায়গায়টায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি। কিংসের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ ম্যাচটায় দেখেন, ওদের বিদেশিরা কী খেললো আর আমাদের বিদেশিরা কী খেললো! এই গ্যাপগুলো আমাদের পূরণ করতে হবে।’

আরআই/এমএমআর/জিকেএস