ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। সড়কের দুই পাশ, বিভিন্ন রাস্তার মোড় ও হলগুলোর চারপাশ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জিয়া মোড় থেকে শেখ হাসিনা হল পর্যন্ত রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে নাক চেপে পার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যস্ততম সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম জিয়া মোড় সংলগ্ন সাদ্দাম হোসেন হলের সামনের রাস্তা। প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এরপাশে অবস্থিত চায়ের দোকান, খাবার হোটেল ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে বসে শিক্ষার্থীরা খাওয়া দাওয়া করেন।
তবে এ রাস্তার পাশেই স্তূপ করে রাখা হয়েছে নানান ময়লা আবর্জনা। এরপাশে ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। তবে সেই ডাস্টবিন ময়লা আবর্জনায় ভরে গিয়েও আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে। এছাড়াও রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে ময়লা তুলে সেগুলো সেখানেই দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়। এতে সে আবর্জনা থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হল পুকুরের উত্তর দিকের রাস্তার পাশে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। যার ফলে সেখান দিয়ে চলাচল প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সাদ্দাম হোসেন হলের উত্তর পাশে, জিয়া হল মসজিদের পাশে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। ফলে এসব স্থান দিয়া চলাচলের সময় নাক চেপে বা নাকে কাপড় হাটতে হয় শিক্ষার্থীদের।
Advertisement
এদিকে জিয়াউর রহমান হলের পেছনের অবস্থা আরও খারাপ। বিভিন্ন হল ও দোকান থেকে ময়লা এনে সেখানে স্তূপ করে রাখা হয়। ফলে সেখান থেকে মশার ও ক্ষতিকর জীবাণুর জন্ম হয়। এছাড়াও নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে হলের পেছনের ড্রেনে ময়লা পচে দুর্গন্ধ চড়াচ্ছে। এতে হলের দক্ষিণ ব্লকের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
এসব স্তূপাকৃতির ময়লা আবর্জনায় কিছুদিন পরপরই অপরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়। ফলে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারদিক। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এসব অপরিকল্পিত আগুনের ফলে বিভিন্ন সময়েই গাছপালা পুড়ে যায়। এদিকে মফিজ লেকের উত্তর পাশের ময়লার স্তূপে প্রতিনিয়তই জ্বলে আগুন। এর ক্ষতিকর কালো ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো লেক। এতে লেকের নির্মল পরিবেশে ঘুরতে যাওয়া লোকজন ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন।
বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড়ের সবজি বিক্রেতা শুক চাঁদ বলেন, জিয়া মোড়ের হোটেলের সব ময়লা এখানে ফেলা হয়। ময়লার দুর্গন্ধে দোকানে বসে থাকাই যায় না। তাছাড়া হোটেলের লোকদের এখানে ময়লা ফেলতে নিষেধ করলেও তারা শুনে না। হোটেলগুলো সবসময় এ পুকুরের পাশেই মাছের ময়লা, পচা ভাত ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট ফেলে রাখে। তাছাড়া কর্তৃপক্ষও এখানের ময়লা নিয়মিত পরিষ্কার করে না।
নুর আলম নামে জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলের পেছনে প্রতিনিয়ত ময়লা ফেলা হয়। সেগুলো পচে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। দুর্গন্ধে রুমের দরজা জানালা খোলা যায় না। সবসময় দরজা জানালা আটকিয়ে রাখতে হয়। ফলে হলের দক্ষিণ দিকের রুমের শিক্ষার্থীদের একপ্রকার বন্দীদশা তৈরি হয়েছে। এদিকে কর্তৃপক্ষও কোনো খোঁজখবর রাখেন না।
Advertisement
এ বিষয়ে এস্টেট অফিস প্রধান শামছুল ইসলাম জোহার অফিসে একাধিকবার গেলেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এস্টেট অফিসের কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় কিছু আবর্জনা রয়েই যায়। একবার পরিষ্কারের পার দুয়েকদিনের মধ্যে আবার আবর্জনায় স্তূপ হয়ে যায়।
মুনজুরুল ইসলাম/আরএইচ/জেআইএম