খাজনার আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে উচ্চ আদালতের দেওয়া আদেশ প্রতিপালন না করায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নূর কুতুবুল আলমকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আাগমী ২৭ মে তাকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
Advertisement
রায় ও ডিক্রি অনুযায়ী জমির খ তফসিল ও ১/১ খতিয়ান থেকে অবমুক্ত করে খাজনা গ্রহণের বিষয়ে দরখাস্তকারী প্রীতম মুখার্জিসহ অন্যান্যদের আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য উচ্চ আদালতের দেওয়া আদেশ প্রতিপালন না করায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নূর কুতুবুল আলমকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (১২ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট পীরজাদা সৈয়দ আবু হানিফা ইবনে জামাল মো. আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এম. এম. জি সারোয়ার (পায়েল)।
Advertisement
এই দুই আইনজীবী আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে,পটুয়াখালী সদরের চরজৈনকাঠী মৌজায় (খ) তফসিলভুক্ত ২১.৭৪ একর জমি ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২১ নভেম্বর ডিক্রির সই করা হয়। রায় ও ডিক্রির নথিপত্র দিয়ে জমাখারিজ করার জন্য ভূমি অফিসে গেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জানান, ডিসির অনুমোদন ছাড়া জমাখারিজ খতিয়ান খুলতে পারবেন না। এরপর ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ পটুয়াখালীর ডিসি বরাবর অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হয়। তাতে জেলা প্রশাসক সাড়া না দেওয়ায় আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর আদেশ দেন। ওই দিন ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য বলা হয় এবং রুলও জারি করেন।
এছাড়া একই ধরনের আরও একটি আবেদন করা হয়, যেখানে জমির পরিমাণ (১/১ খতিয়ান ভুক্ত) ১.৬৪ একর। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি ডিক্রির সই করা হয়। রায় ও ডিক্রির নথিপত্র দিয়ে জমাখারিজ করার জন্য ভূমি অফিসে গেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা একই পরামর্শ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১৫ মে পটুয়াখালীর ডিসি বরাবর অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হয়।
ওই আবেদন নিষ্পত্তির বিষয়ে গড়িমসি করলে পিটিশনার প্রীতম মুখার্জী ও অন্যান্যরা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিসিকে আবেদন নিষ্পত্তির জন্য আদেশ দেন আদালত।
Advertisement
ওইদিন ৬০ দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য বলা হয় এবং রুলও জারি করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে গত ৮ মে জেলা প্রশাসকের কাছে আদেশের বিষয়টি অবগত করে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক একটি ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, পরে আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে। তাতে আদালত অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
ওই আদেশ প্রতিপালন না করে গড়িমসি করায় ডিসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। আদালত অবমাননার ওই আবেদন শুনানি নিয়ে আজ ডিসিকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুলও জারি করেন আদালত। রুলে তাকে আগামী ২৭ মে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করার কারণ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এফএইচ/ইএ/জেআইএম