‘মা’ ডাকটি পৃথিবীর সবচেয়ে মধুরতম। ছোট্ট এই শব্দটি অন্তরের অন্তঃস্থলে গিয়ে অবস্থান করে। এর অতলে লুকানো থাকে গভীর স্নেহ, মমতা ও অকৃত্রিম ভালোবাসা। তাই তো মমতাময়ী মায়ের সম্মানে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘বিশ্ব মা দিবস’ পালিত হয়। এই দিবসের ছোঁয়া লেগেছে আজ সোশ্যাল মিডিয়ায়। কবি, কথাশিল্পী, উপস্থাপক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ তাদের মাকে স্মরণ করেছেন। আজ নেট দুনিয়ায় চলছে শুধু মায়ের বন্দনা।
Advertisement
নাহিয়ান ফারুক নামের একজন লিখছেন, ‘গলায় মাছের কাঁটা আটকে গেলে, আম্মা একদলা-শুকনো ভাত খাইয়ে দিতেন আর বারবার জিজ্ঞেস করতেন কাঁটার ব্যাপারে। আমিও ঢোঁক গিলেগিলে যাচাই করতাম নামল কি না। একসময় নেমে যেত, আমার চেয়ে আম্মার স্বস্তি তখন অনেক বেশি। এখন সারা গায়ে কাঁটা। ফোঁড় খেয়ে বেঁচে আছি। আম্মারে দেখাতে পারি না। দেখাতে পারলে নিশ্চয়ই তিনি সব কাঁটা নামিয়ে দিতেন অনায়াসে। কেন যে দেখাতে পারি না!’
সংবাদ উপস্থাপক মুমতাহিনা হাসনাত রিতু লিখেছেন, ‘আর কী লাগে জীবনে? আলহামদুলিল্লাহ। সব মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই মা দিবসে।’
লেখক সাখাওয়াত হোসেন সজীব লিখেছেন, ‘আমার মাকে প্রায় আফসোস করতে দেখি, ‘আজ যদি আমার বাবা-মা বেঁচে থাকতো, উনাদের নিজের টাকা দিয়ে এইটা দিতাম, সেইটা দিতাম’। অনেক বন্ধুকেও দেখি; যাদের বাবা-মা পরকালে, নিজের কামানো টাকা দিয়ে যদি কিছু দিতে পারতো। আমারও আফসোস লাগে, যদি আব্বুকে আমার টাকা দিয়ে ঢাকার বেস্ট বেস্ট শিঙাড়া খাওয়াতে পারতাম (উনারও আমার মতো শিঙাড়া বেশ পছন্দের)। আজ নিজের কামাইয়ের টাকা দিয়ে আমার বুড়ি মাকে একটা মোবাইল গিফট করলাম। যদিও খুব স্বল্প মূল্যের। তারপরও নিজের টাকা দিয়ে তাদের জন্য কিছু করতে পারা শান্তির! আত্মতৃপ্তির!’
Advertisement
কবি ও সাংবাদিক স্বরলিপি লিখেছেন, ‘জীবন মৃত্যুকে ছুঁয়ে এলে মা হওয়া যায়।’
আরও পড়ুনফেসবুকে বাংলাদেশি নারী বাড়ছে, কমছে পুরুষবুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ চান চমক হাসান
আমেরিকা প্রবাসী রূপম রাজ্জাক লিখেছেন, ‘জ্ঞানীরা বলে থাকেন, ‘‘দ্য বেস্ট ম্যান ফর দ্য জব ইজ অফটেন আ উইম্যান’’। সম্ভবত এ কারণে যে একজন মায়ের দায়িত্বে বিরতি বা শেষ বলে কিছু নেই। এবং তিনি তা হাসিমুখে পালন করেন। মা দিবসে আমার নিজের মা, আমার বাচ্চাদের মা এবং পৃথিবীর সব মায়ের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।’
কবি ও গল্পকার মাঈন উদ্দিন আহমেদ লিখেছেন, ‘আমি খোদাকে বলি—মায়ের তসবির মতোই দোয়াময় হোক আমাদের পথ।’
Advertisement
সাজ্জাদ হোসাইন সোহাগ লিখেছেন, ‘পৃথিবীর সকল মাই শ্রেষ্ঠ মা। কিন্তু আমার আম্মা একটু আলাদা। আমাকে টানা ২৬ বছর ধরে আম্মা নিজের হাত দিয়া ভাত খাওয়ায় দিছে। আমার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে দৃশ্যটা খুব পরিচিত হলেও আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের কাছে প্রথমবারের মতো বিষয়টা শেয়ার করলাম। আমি বাসায় কখনো আমার নিজের হাত দিয়ে খাবার খাই না।’
এস এম শামীম লিখেছেন, ‘তোমার গর্ভে ধারণ করেছিলে বলেই আজ আমি সফল। মা দিবসে সকল মাকে জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।’
আসলে অল্প কথায় মাকে নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করা সহজ কাজ নয়। জীবনের অনেক কথাই মাকে বলা হয় না। মুখ ফুটে বলাও হয় না, ‘মা তোমাকে ভালোবাসি’। কিন্তু মায়ের জন্য সব সময়ই অন্তর পোড়ে। অপ্রকাশ্য এই ভালোবাসা অনন্তকাল থেকে যায়। ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে কিছু কথা প্রকাশিত হয়।
এসইউ/জেআইএম