সর্বজনীন পেনশনের বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।
Advertisement
রোববার (১২ মে) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে (ভিসি চত্বর) অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মো. আব্দুল মোত্তালেব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। উক্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে ১ জুলাইয়ের পর যোগদান করলে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত হবে। হঠাৎ করেই এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন; এরই ধারাবাহিকতায় আরো স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
বক্তারা বলেন, এই প্রজ্ঞাপন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষাদর্শনের প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শনের শামিল বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন মনে করে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। কেননা এর ফলে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে আসতে আগ্রহী হবে না। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দুরভিসন্ধি রয়েছে কিনা সেটাও ভেবে দেখা দরকার।
ঢাবির কর্মকর্তারা বলেন, যে মূহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় এসে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমাজও তার উন্নয়ন যাত্রায় বিপুল উৎসাহ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছেন, ঠিক সেই মূহুর্তে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের পথে ঠেলে দেওয়ার পুরনো কৌশল শুরু হয়েছে।
মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অসন্তোষ দূর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
Advertisement
হাসান আলী/এসআইটি/এমএস