দেশজুড়ে

সিলেটে আনোয়ার-আরিফের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে কৌতূহল

সিলেট নগরীতে নতুন গৃহকর নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। নগরীর বাড়িওয়ালাদের এক ধরনের তোপের মুখে রয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও তার বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন।

Advertisement

এ পরিস্থিতিতে ‘গোপন বৈঠক’ করেছেন সিলেটের বর্তমান ও সাবেক মেয়র। শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় একটি স্থানীয় পত্রিকা অফিসে এ বৈঠক হয়।

যদিও তাদের বক্তব্যে এটিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা হচ্ছে। তবে ‘গোপন বৈঠক’ নিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

তবে এক বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, নতুন নির্ধারিত গৃহকর নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেই এ বৈঠকে বসেছিলেন। বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের হাত ধরে নতুন গৃহকর বাস্তবায়ন হলেও ২০১৯-২০ সালে মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান শেষে হোল্ডিং সংখ্যা পুনর্নির্ধারিত করা হয়েছিল। সেসময় সিসিকের দায়িত্বে ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী।

Advertisement

যে কারণে নতুন গৃহকর নিয়ে কেউ বলছেন বিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে গৃহকর নির্ধারণ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, বিদায়ী মেয়রের স্থগিত রাখা গৃহকরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন নতুন মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

এর আগে পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে নতুন নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) অনুযায়ী ভবনমালিকদের গৃহকর পরিশোধের নোটিশ দেওয়া শুরু তরে সিলেট সিটি করপোরেশন। এরপর নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবনমালিকের গৃহকর ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। এটি বাতিলের দাবিতে প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান শেষে হোল্ডিং সংখ্যা পুনর্নির্ধারিত হয়। এতে পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং নির্ধারিত হয় ৭৫ হাজার ৪৩০টি। এসবের গৃহকর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১৩ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ৪০০ টাকা। নতুন গৃহকর ধার্যের সময় ধরা হয় ২০২১-২২ সাল। সেই করারোপের তালিকাই ৩০ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ১৫টি ওয়ার্ডের হোল্ডিং এ তালিকায় আসেনি। নতুন গৃহকর নিয়ে আপত্তি থাকলে ১৪ মে পর্যন্ত ভুক্তভোগী বাসিন্দারা আপত্তি জানাতে পারবেন। পরে রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হবে।

Advertisement

এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে সিলেটের স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে গোপনে বৈঠকে বসেন বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তারা গৃহকর নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় একান্তে কথা বলেন।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সাক্ষাৎকালে নগরীর বিভিন্ন বিষয়সহ গৃহকর নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রোববার পরিষদের সভা আছে, সেখানে নতুন গৃহকর নিয়ে আলোচনা হবে। নাগরিক থেকে শুরু করে সুশীল সমাজসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেই গৃহকর পুনরায় নির্ধারণ করা হবে।’

একটি পত্রিকা অফিসে বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়রের সৌজন্য সাক্ষাৎ কেন- এমন প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, ‘বর্তমান ও সাবেক মেয়র দুজনেই একই সময়ে একই এলাকায় ছিলেন। তখন পাশে পত্রিকা অফিস থাকায় সেখানেই বসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।’আহমেদ জামিল/কেএসআর