মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম (৪০)। ছয় মাস আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর থেকে পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেলিমের সন্ধান পাননি। তবে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রয়কেন্দ্রে সেলিমের ছবি দেখতে পান পরিবারের লোকজন।
Advertisement
মঙ্গলবার (৭ মে) সেলিমের মা রাবিয়া, চাচাতো ভাই গ্রামপুলিশ সদস্য আব্দুর রশিদ চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। বুধবার পুলিশের সহায়তায় সেলিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দরিদ্র হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে আনার পরে সেলিমের শরীরে বিভিন্ন অংশে কোমরের দুপাশে কাটাছেঁড়ার দাগ দেখতে পান পরিবারের লোকজন। স্বজনদের অভিযোগ, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রয়কেন্দ্রে সেলিমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে তার কিডনি বের করে নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষজন সেলিমের বাড়িতে জড়ো হন। লাল কাপড় পরিহিত কাউকে দেখলেই ভয়ে আঁতকে উঠছেন সেলিম। ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না। কোমরের দুপাশে কাটাছেঁড়ার দাগ। এখনো শুকায়নি সেই দাগগুলো।
সেলিমের মা রাবিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল, কিন্তু তার শরীরে কোনো দাগ ছিল না। পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতনের পর তার কোমরের দুপাশে কাটাছেঁড়া করে কিডনি খুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’
স্ত্রী ফাতেমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। পাগল হলেও তিনি আমার স্বামী। এখন তার যে অবস্থা করেছে, মনে হয় আমার মেয়েরা এতিম হবে। আমি বিধবা হয়ে যাবো।’
কথা হয় সেলিমের চাচাতো ভাই আব্দুর রশিদের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সেলিমের অবস্থা খুব খারাপ। তার পেটের নাভির নিচে কাটা দাগ রয়েছে। তার শরীরে পানি জমে গেছে। তাকে চিকিৎসা করাতে ময়মনসিংহের চরপাড়া নগরীর একটি ক্লিনিকে নিয়ে আসছি। এখান থেকে ডাক্তার দেখিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাবো।’
Advertisement
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজনকে তার চিকিৎসা ও কিছু পরীক্ষার করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে ঘটনাটা কী।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/জেআইএম