গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এরপরও সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে বাড়ে। এতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বাড়লো ৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
Advertisement
গত সপ্তহজুড়ে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশপাশি সবকটি মূল্য সূচকও বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির। আর ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭ হাজার ২৬ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা বা দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৬ হাজার ২৩০ কোটি টাকা বা দশমিক ৮৯ শতাংশ। এতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বাড়লো ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা।
এদিকে, ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৯৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ফলে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়লো ১৪২ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।
Advertisement
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৩ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে ১০ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৫ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭০৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৫৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা বা ৩৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৮০২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
Advertisement
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৩১ কোটি ২২ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বেস্ট হোল্ডিং, মালিক স্পিনিং, গোল্ডেন সন, ন্যশনাল ব্যাংক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ফারইস্ট নিটিং।
এমএএস/এসএনআর/এমএস