দেশজুড়ে

ক্যাম্প ভাঙচুর-কর্মীকে গুলি, প্রতিবাদে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

 

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে উপজেরা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম খানের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও এক কর্মীকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

এ ঘটনার প্রতিবাদে আব্দুর রহিম খানের বিক্ষুব্দ কর্মী-সর্মথকরা গাছের গুড়ি ফেলে প্রায় তিন ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার (১০মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার আরিচা ডাক্তারখান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জয় ঘোষ।

শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম খানের কর্মী জয় ঘোষ জানান, বিকেলে তার বাড়ির সামনে ডাক্তারখানা এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এসময় কয়েকটি মাইক্রোবাস এসে থামে।

Advertisement

‘একটি গাড়ি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান খান জানুর বড় ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ফাহিম খান রনি দলবলসহ বের হন। বের হয়েই অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে জয় ঘোষকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এসময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জয় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এসময় আব্দুর রহিম খানের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাইশা তামান্নাকে লাঞ্ছিত করেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করে।’ জানান জয় ঘোষ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন রহিম খানের কর্মী-সর্মথকরা। তারা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ ও পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ বলেন, সরকার নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। অথচ এক শ্রেণির আওয়ামী লীগ নামধারী প্রার্থী নানান ভীতিকর অবস্থা তৈরি করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ- ভোটে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে ছাড় দেওয়া হবে না। সে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, অচিরেই তারা আইনের আওতায় আসবে।

Advertisement

গুলি ছোড়া ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত ফাহিম খান রনি জানান, কোনো গুলি ছোড়া ও নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। তবে তার পিতা রেজাউর রহমান জানুর পোস্টার ছেড়া নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়েছে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জয় ঘোষ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এরপরই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগেও চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম খানের গাড়িবহরে ককটেল ও গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। রহিম খানের সঙ্গে দেখা করার অভিযোগ মারধর করা হয় চার ইউপি সদস্যকে। ককটেল বিস্ফোরণ হয় এক সর্মথকের বাড়ির সামনেও।

প্রতিটি ঘটনার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানুর ছেলে ও ভাতিজাকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন।

বি.এম খোরশেদ/ইএ