দেশজুড়ে

যশোরে আলোচনায় ‘কিশোর গ্যাং’

যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মাঠে আলোচনায় উঠে এসেছে ‘কিশোর গ্যাং’। নির্বাচনকে ঘিরে নেপথ্যের বড়ভাইয়েরা কিশোর গ্যাংকে মাঠে নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্র বিমুখ করতে তৎপতর। তবে প্রশাসনও কিশোর গ্যাং মোকাবিলায় ‘জিরো টলারেন্স’নীতির কথা জানিয়েছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারাদেশেই এখন বইছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া। যশোরে প্রথম ধাপে ইতোমধ্যে দুই উপজেলায় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে তিন উপজেলা এবং শেষ ধাপে আরও তিন উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী কোনো দল অংশ নেয়নি। ফলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ‘ঘরের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ‘হাইব্রিড, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার, অস্ত্র-মাদকের কারবারিরাও প্রার্থী হয়েছেন। এতে আতঙ্কিত বোধ করছেন সাধারণ ভোটাররা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় প্রায় অর্ধশত কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। একেকটি গ্রুপে অন্তত ৮-১৬ সদস্য রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় একাধিক গ্রুপও সক্রিয় রয়েছে। এসব গ্রুপের সঙ্গে জড়িতদের বয়স ১৪ -২১ বছর। বিভিন্ন অপরাধে জড়িত এই কিশোররা দেশিও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পাশাপাশি চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এমনকি অপহরণ, বোমাবাজি ও হত্যাকান্ডের মতো গুরুতর অপরাধেও জড়িত তারা।

Advertisement

যশোর কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, শহরের ষষ্ঠীতলা পাড়া, পুরাতন কসবা, মুজিব সড়ক, তেঁতুলতলা, রেলগেট, তুলোতলা, রায়পাড়া, শংকরপুর, বকচর, বেজপাড়া, খোলাডাঙ্গা, চাঁচড়া, ভাতুড়িয়া, শংকরপুর বাস টার্মিনাল, রেল রোড, মণিহার, উপশহর, পালবাড়ি, ধর্মতলা, খড়কি, খড়কি কলাবাগান, রেল স্টেশন, বিরামপুর, নীলগঞ্জ, সিটি কলেজপাড়া, বারান্দিপাড়া, পুলেরহাট ও শেখহাটিতে গ্রুপভিত্তিক কিশোর অপরাধ বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোরে সন্ত্রাসী তৎপরতা, খুন, চাঁদাবাজি, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ওই অর্ধশত ‘কিশোর গ্যাং’ জড়িয়ে রয়েছে। নেপথ্যে থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণকারী একাধিক ব্যক্তি এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনী মাঠে ফায়দা নিতে তারা কিশোর গ্যাং’ মাঠে নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের টার্গেট, নির্বাচনী মাঠে সন্ত্রাসের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। যাতে ভোটাররা কেন্দ্রমুখী না হয়।

তবে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণা বা ভোটগ্রহণের সময় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা অপতৎপরতা প্রশাসন বরদাস্ত করবে না। নির্বাচনী মাঠ শান্তিপূর্ণ রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে মাঠে থাকবে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সদরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সব টিম সার্বক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিশোর গ্যাং বা কোনো সন্ত্রাসী চক্রের নির্বাচনী মাঠে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। যেকোনো অপতৎপরতা পুলিশ কাঠোর হস্তে দমন করবে।

Advertisement

মিলন রহমান/এএইচ/জিকেএস