ডোমার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফল ঘোষণার আগ মুহূর্তে হামলা চালিয়েছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের ছোট ভাই মনজুর আহমেদ ডন। তার নেতৃত্বে এ সময় উপজেলা পরিষদের হলরুমের চেয়ার, টেবিল, দরজা, জানালাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকের ওপর হামলা করা হয়। বুধবার (৮মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডোমার উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এ সময় জাগো নিউজের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংবাদকর্মীরা তাৎক্ষণিক সরে গেলে হামলার হাত থেকে বেঁচে যান। তবে পরবর্তীতে সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে আবারও সাংবাদিকদের ওপর চেয়ার ছুড়ে মারেন প্রার্থীর ছোট ভাই ডন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
মনজুর আহমেদ ডন উপজেলার পশ্চিম বোড়াগাড়ী এলাকার মৃত শওকত আলীর ছেলে। তিনি নীলফামারী জেলা পরিষদের ডোমার উপজেলা সদস্য বলে জানা গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ভোটগণনা শেষে প্রতিটি কেন্দ্রের খসড়া ফলাফলে নিজেকে পরাজিত জেনে ভোটের ফলাফল স্থগিতের জন্য ছোটভাই ডনের নেতৃত্বে এ পরিকল্পিত হামলা চালান আনারস প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ। সেসময় হলরুমে উপস্থিত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রার্থীসহ সাংবাদিকরা ভেতরে আটকা পড়েন। ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় ফলাফল ঘোষণা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় পালিয়ে যান ডন ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা।
Advertisement
রাত সাড়ে ১১টার সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতিতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুর-ই আলম ভোটের ফল ঘোষণা করেন। এতে ৩১ হাজার ৪২১ ভোট পেয়ে সরকার ফারহানা আকতার সুমি (টেলিফোন) বেসরকারিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তোফায়েল আহমেদ (আনারস) ২৩ হাজার ১৩৪ ভোট পান।
ফল ঘোষণার পর পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে আবারও হট্টগোলের সৃষ্টি করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে।
এ বিষয়ে জানতে পরাজিত প্রার্থী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী সরকার ফারহানা আকতার সুমি জাগো নিউজকে বলেন, আমার এ বিজয় ছিনিয়ে নিতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছে। প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে তাদের ছত্রভঙ্গ করে এবং আমাকে ও আমার লোকজনদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করবো। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা, এ বিজয় পুরো ডোমারবাসীর।
Advertisement
ডোমার উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নুর-ই আলম জাগো নিউজকে বলেন, হামলাকারীরাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া সিসিটিভির ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হবে। এরইমধ্যে হামলাকারী কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।
ইব্রাহিম সুজন/এফএ/এএসএম