লিটন দাস কি বিশ্বকাপ দলে আছেন? আইসিসির বেঁধে দেওয়া সময়সীমার (১ মে) মধ্যে বিসিবি যে ১৫ জনের দল জমা দিয়েছে, সেখানে কী আছেন এই ওপেনার? ওই দলটিতে ব্যাটার রয়েছেন কতজন এবং তারা কারা?
Advertisement
পেসার কোটায় বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখা হয়েছে কাদের? স্পিন ডিপার্টমেন্টই বা সাজানো হয়েছে কতজনকে দিয়ে? এর সাথে বিসিবি বিশ্বকাপ দল ঘোষণাই বা করবে কবে? এসব প্রশ্ন এখন দেশের প্রায় সব ক্রিকেট অনুরাগীর মনেই উঁকি দিচ্ছে।
প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আজ পড়ন্ত বিকেলে জাগো নিউজকে দল ঘোষণার বিষয়ে বলেন, ‘আমরা তো আইসিসির কাছে নির্ধারিত সময়ে দলের তালিকা জমা দিয়েছি। এখন সেই দলটি ঘোষণা করা হবে বিসিবির পক্ষ থেকে। যতদূর জানি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ মে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দিন কিংবা তার পরদিন ঘোষণা হতে পারে টি-টেয়েন্টি বিশ্বকাপের দল।’
আরও পড়ুন : হায়দরাবাদকে ১৬৬ রানের লক্ষ্য দিলো লখনৌ
Advertisement
আজ বিকেলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় শেষ দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দল ঘোষণার পর গুঞ্জন ডালপালা গজিয়েছে। যারা আজ দুপুর পর্যন্ত ধরে বসেছিলেন, লিটন দাস বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেই, তারা ইউটার্ন নিয়েছেন।
চট্টগ্রামে দলে থাকার পরও কোন ম্যাচ না খেলা অপর ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ঢাকার শেষ দুই ম্যাচে বাদ পড়ায় পরিষ্কার হয়েছে, রান খরায় ভোগা লিটনের বিকল্প হিসেবে নেই পারভেজ হোসেন ইমন। আর হাজারো খারাপ খেলার পরও ১৫ জনের দলে ঠিক আছেন লিটন।
অনেকেই বুঝে গেছেন, যত খারাপ ফর্মই থাকুক না কেন, তার ব্যাট যতই না হাসুক- লিটন দাসকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হয়েছে এবং যতদূর জানা গেছে, ব্যাটিং টেকনিক, মেধা ও অতীত পারফরম্যান্সকে বিশেষ বিবেচনায় এনেই লিটনকে ১৫ জনের দলে রাখা হয়েছে।
ওপেনার কোটায় লিটন আছেন। এখন প্রশ্ন হলো বাকি দুই ওপেনিং অপশন কে কে? যেহেতু পারভেজ হোসেন ইমন নেই এবং তানজিদ তামিমের সাথে ঢাকা পর্বে সৌম্য সরকার যুক্ত, তাই এ দুজনেরই বিশ্বকাপ দলে জায়গা নিশ্চিত।
Advertisement
প্রশ্ন উঠতে পারে, উঠছেও- যদি তাই হয় তাহলে পারভেজ হোসেন ইমনকে কী মিছেমিছি প্রথম তিন ম্যাচের জন্য দলে নেয়া হয়েছিল? নির্বাচকদের পক্ষ থেকে সরাসরি এ প্রশ্নের জবাব দেয়া না হলেও কারণ বেরিয়ে এসেছে।
সৌম্যর ঢাকা পর্বে খেলা অনিশ্চিত ছিল। টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা সংশয়ে ছিলেন, ঢাকার শেষ ২ ম্যাচের আগে সৌম্য সরকার পায়ের ইনজুরি কাটিয়ে শতভাগ ম্যাচ ফিটনেস পাবেন কি না? সৌম্যকে ফিট করতে তাই চট্টগ্রামে সিরিজ চলাকালীন টিম বাংলাদেশের ফিজিও , ট্রেনার ও স্পেশালিস্ট কোচরা সবাই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেছেন এবং আশার কথা সৌম্য সেই ফিটনেস সার্টিফিকেট পেয়েছেন এবং টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রেই জানা গেছে সৌম্য ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পাওয়ায় দলে ফিরেছেন।
এখন ধারনা করা হচ্ছে, আগামী পরশু শুক্রবার ও ১২ মে রোববার দুই ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সৌম্যকে খেলানো হবে। সেটা লিটন দাসের সাথে ওপেনার হিসেবেও হতে পারে, কিংবা তানজিদ তামিমের পার্টনার হিসেবেও হতে পারে।
মোটকথা ওপেনিংয়ে ৩টি বিকল্প, একজন ডানহাতি লিটন আর ২ বাঁ-হাতি সৌম্য ও তানজিদ তামিম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বকাপ স্কোয়াডে বাকি ব্যাটার আছেন ৫ জন (নাজমুল শান্ত, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক)। যেহেতু স্কোয়াডে সৌম্য সরকার আছেন, তিনি প্রয়োজনে ওপরের পাশাপাশি মিডল অর্ডারেও খেলতে পারেন, তাই আর বাড়তি ব্যাটিং অপশনের কথা ভাবা হয়নি। সে কারণেই কপাল পুরেছে আফিফ হোসেন ধ্রুব’র।
লক্ষ্য করুন, তানজিদ তামিম, শান্ত ও সাকিবের পরে হৃদয়, রিয়াদ, জাকের আলী, রিশাদ ও শেখ মেহদি সবাই ডানহাতি। তাদের মাঝখানে একজন বাঁ-হাতি রাখার প্রয়োজনীয়তাও আছে যথেষ্ঠ। বাংলাদেশের ইনিংসের মাঝামাঝি প্রতিপক্ষ দলে বাঁ-হাতি পেসার-স্পিনার আর লেগি বল করলে ৫ থেকে ৭ নম্বরে একজন বাঁ-হাতি ব্যাটারের যৌক্তিকতা থাকবে। সেই বিবেচনার পাশাপাশি জেন্টল মিডিয়াম পেস বোলিং অপশন হিসেবেও তাকে ব্যবহার করা যায়, তাই দলে রয়েছেন সৌম্য সরকার।
দলে সৌম্যকে ছাড়া ৪ জনের বেশি পেস বোলার অন্তর্ভুক্তির কোনোই সম্ভাবনা নেই। সৌম্য না থাকলে ৫ স্পেশালিস্ট পেসারই দলভুক্ত হতেন। কিন্তু এখন সৌম্যকে ধরে পেসার আছেন ৫ জন। পেসার হিসেবে তাসকিন, মোস্তাফিজ ও শরিফুল পুরোপুরি নিশ্চিত। সাথে সাইফউদ্দিন ও তানজিম সাকিবের একজন।
কেউ কেউ সাইফউদ্দিনকেও মোটামুটি নিশ্চিত বলেই ভাবছেন। তবে ভেতরের খবর, তানজিম সাকিবও চার নম্বর পেসার হতে পারেন। তাহলে কি দাঁড়ালো- ৩ ওপেনার, ৫ মিডল অর্ডার ব্যাটার মিলে ৮ জন। সঙ্গে ৪ পেসার। ১২ জন। ধরা যাক সাকিব ব্যাটার কিংবা অলরাউন্ডার, তাহলে কিন্তু তাকে দলে রেখে আরও তিন স্পিনার নেয়ার সুযোগ থাকবে।
আর সেক্ষেত্রে অপর বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ইসলামের সম্ভাবনাও কিন্তু কম নয়। জানা গেছে, অতিরিক্ত স্পিন অপশন হিসেবে সাকিব, রিশাদ ও শেখ মেহদির সাথে যুক্ত আছেন তানভিরও।
এবার ১৫ জনের বিশ্বকাপ স্কোয়াড মিলিয়ে নিন
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, রিশাদ হোসেন, শেখ মেহদি, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, সাইফউদ্দিন/তানজিম সাকিব ও তানভির ইসলাম।
এআরবি/আইএইচএস