জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নতুনকে আলিঙ্গন করে নব জাগরণের ডাকে ফিরে আসে পঁচিশে বৈশাখ। বাংলার মানুষের জীবনসংগ্রাম, দুঃখ-দুর্দশা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাঙালির আত্মপরিচয় ও আত্মবোধের বিকাশের মূলেই রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিবিড় সম্পর্ক।
Advertisement
বুধবার (৮ মে) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন ও বাস্তবতা : রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষের দীর্ঘ সংগ্রাম, অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রাণপুরুষ। পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একই পথের যাত্রী। দুজনের দর্শনের কেন্দ্রে ছিল বাঙালির আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদাবোধ।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কবিগুরু ছিলেন প্রেম, প্রকৃতি, পূজা, স্রষ্টার বন্দনা ও মানবতার অফুরন্ত সংমিশ্রণ। প্রতিবাদ ও সহমর্মিতার মিশ্রণ একই সঙ্গে হয়েছে তার লেখনিতে। কঠোর ও কোমলের সংমিশ্রণের একটি অনন্য উদাহরণ হলো ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম নবীন ও প্রবীণের বন্ধন, নারী অধিকার ও নারীজীবনের বাস্তবতাকে রবীন্দ্রনাথ তার প্রবন্ধ, গল্প ও কবিতায় বিশেষভাবে স্থান দিয়েছেন। যুদ্ধের দামামায় অশান্ত বিশ্বের বুকে শান্তির বাণী ছড়িয়েছেন। আঁধার কেটে আলোর পথে সত্য ও সুন্দরের নিরন্তর সাধনায় রবীন্দ্রনাথ নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। সমাজের বিবর্ণতা দূরীকরণে বাঙালির চিন্তায় ও মননে একাত্ম হয়ে থাকবেন রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু।
এসময় প্রোগ্রামের শুভ উদ্বোধন করেন স্পিকার। তিনি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন। এসময় বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় কবিগুরুর ‘বাঁশি’ কবিতা আবৃত্তি করেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এবং স্মারক বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী, রবীন্দ্র অনুরাগী, গণমাধ্যমকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
আইএইচআর/এমকেআর/এমএস