স্বাস্থ্য

‘বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া নির্ণয় জরুরি’

থ্যালাসেমিয়া বংশগত একটা রোগ। যেটি পরিবারের মাধ্যমে সঞ্চারিত হয়। সমাজের অনেকেই জানে না সে থ্যালাসেমিয়া বহন করছে কি না। আমাদের এ সচেতনতা এখনো তৈরি হয়নি। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই থ্যালাসেমিয়া রোগ বাহক হলে শতকরা ২৫ শতাংশ সুস্থ শিশু জন্ম নিতে পারেন। এ জন্য উভয়েরই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট করা জরুরি। তাহলে এর থেকে পরিত্রাণ সম্ভব।

Advertisement

আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে বুধবার (৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা, প্রতিরোধ ও সচেতনতা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এ বছর থ্যালাসেমিয়া দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, প্রতিটি প্রাণের ক্ষমতায়ন এবং অগ্রগতিকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়সংগত ও সহজলভ্য থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ’র হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ।

Advertisement

মূলপ্রবন্ধে তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়ার সঠিক চিকিৎসা না হলে শারীরিক অনেক পরিবর্তন হয়। রোগীদের মুখের হাড়, মাথার হাড়ের পরিবর্তন হয়। এছাড়া তাদের বেড়ে ওঠা ঠিকভাবে হয় না। রোগীদের হরমোনাল সমস্যার কারণে বয়স অনুযায়ী ছেলে-মেয়ের বৈশিষ্ট্য আচরণ ও অবয়বে ফুটে ওঠে না। তাদের গায়ের রঙ হলদে হয়ে যায়, অস্থির দেখা যায়, জ্বর, ডায়েরিয়াসহ নানা রোগে ভুগতে থাকে। সেইসঙ্গে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে আক্রান্ত শিশুদের বাঁচিয়ে রাখতে পরিবারকে রক্ত সংকটসহ অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, থ্যালাসেমিয়া রেজিস্ট্রি করার জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোগ নিলেও সেটি আলোর মুখ দেখেনি। যারা আক্রান্ত তারাও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানেন না। আমাদের দেশে থ্যালাসেমিয়ার ভয়াবহতা নিয়ে সরকারিভাবে বড় পরিসরে এখনো সচেতনতা তৈরি করতে পারেনি। এ রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতা অন্যতম প্রতিরোধক।

বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের সব থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য দেশেই সহজে এবং সুলভে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন সুবিধা, বোন ম্যারও ট্রান্সপ্লান্টেশনের সুবিধাসহ থ্যালাসেমিয়ার বিশ্বমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য থ্যালাসেমিয়ার মানসম্মত চিকিৎসা ও নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন সুবিধা উপজেলা পর্যায়েও সুলভ ও সহজলভ্য করা, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ সকল বিষয়ে সরকার, গণমাধ্যম, সামাজিক সংগঠন, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।

Advertisement

এসময় রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী ও অংশীদারি সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরএএস/এমএএইচ/জিকেএস