অন্ধত্বজনিত রোগ গ্লূকোমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে প্রতি ১০০ জনে ১০ জন ব্যাক্তি। এছাড়া গত ২০ বছরের তুলনায় গ্লুকোমা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। যেখানে দেশে ২০০২ সালে গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগী ছিল ২.২ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৩.২ শতাংশ।
Advertisement
মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ গ্লকোমা সোসাইটি আয়োজিত গ্লকোমা সার্ভে রির্পোট-২০২৪ পাবলিকেশন অনুষ্ঠানে এই জরিপ প্রকাশ করা হয়। জরিপের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ গ্লকোমা সোসাইটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. শেখ এমএ মান্নাফ।
জরিপে আরও বলা হয়, দেশে পুরুষদের তুলনায় নারীরা রোগটিতে বেশি আক্রান্ত হয়। আর অন্যান্য বিভাগের তুলনায় রাজধানী ঢাকায় এই গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগীর হার অনেক বেশি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জরিপটিতে সর্বমোট অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার জন, যেখানে পুরুষ ৫ হাজার ৯৫৩ জন এবং নারীর সংখ্যা ৬ হাজার ৪৭ জন। তাদের মধ্যে শহুরে মানুষ ৩ হাজার ৭৯০ জন এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ছিলেন ৯ হাজার ২১০ জন। জরিপে সর্বমোট ৩৮৬ জনের চোখে গ্লুকোমা শনাক্ত হয়েছে, যা শতকরা প্রায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
Advertisement
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, গ্লুকোমা শনাক্ত ৩৮৬ জনের মধ্যে ৩০৩টিতে প্রাইমারি ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, যা প্রায় ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়াও প্রাইমারি ক্লোজার গ্লুকোমা পাওয়া গেছে ৬২ জনের মধ্যে, যা শতকরা বিবেচনায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়াও বাকি ২১ জনের সেকেন্ডারি গ্লুকোমা (৫ দশমিক ৬ শতাংশ) পাওয়া গেছে।
এসময় ডা. মান্নাফ বলেন, এর আগে দেশে গ্লুকোমা নিয়ে ২০০২ সালে একটা সার্ভে হয়েছিল, যেখানে দেশে গ্লুকোমা আক্রান্ত রোগী ছিলো ২.২ শতাংশ। ২০২২ সালে আমরা যে সার্ভেটি করেছি, সেখানে গ্লুকোমা রোগী পেয়েছি ৩.২ শতাংশ। এমনকি শতকরা ১০ জন মানুষ পেয়েছি যারা গ্লুকোমা সাসপেক্টেড। আমরা বলি যে, তারা গ্লুকোমা আক্রান্ত হওয়ার পাইপলাইনে আছেন।
তিনি বলেন, জরিপে আমরা ঢাকায় বেশি রোগী পেয়েছি। আবার লিঙ্গ বিবেচনায় নারীদের মধ্যে রোগটি বেশি পাওয়া গেছে। এমনকি বরিশালের পুরুষের মধ্যে কম এবং ময়মনসিংহের পুরুষদের মধ্যে রোগটি বেশি পেয়েছি। তবে নারীদের ক্ষেত্রে বরিশালে বেশি ও ময়মনসিংহে কম দেখা গেছে।
যেহেতু সূক্ষভাবে বিচার করেছি, আমরা আশা করছি ২০০২ সালের চেয়ে উন্নতমানের সার্ভে হয়েছে। যেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রোগীর সংখ্যাটা উঠে এসেছে। এখন আমাদেরকে সচেতনতামূলক কার্যক্রমটা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
Advertisement
অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা শাহিদ বলেন, দেশে এই মুহূর্তে গ্লুকোমা রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯০ জন এবং নারীর সংখ্যা ৭ লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ জন। এছাড়াও গ্লুকোমা সন্দেহভাজন রোগী আছে ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪৯৯ জন, যাদের মধ্যে পুরুষ ২৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৬৫ জন এবং নারী ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৫৩৪ জন।
তিনি বলেন, গ্লুকোমা সার্ভেটি আমরা ১৪ মাসে করেছি। আমাদের ১১০ জনের একটা সমিতি। সারাদেশে সার্ভে করেছে এটাই বড় বিষয়। সকল রোগীদের দায়িত্ব সোসাইটি নিতে পারবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সামনে আমরা সারাদেশের চিত্র তুলে ধরেছি। সেই অনুযায়ী তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আমরা আশা করছি।
এএএম/এমআইএইচএস