মুন্সিগঞ্জে আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়েছে বিস্তৃত জমির আবাদী ফসল। বাঙ্গি, কুমড়া, সবজি, বোরো ধান ও পাটসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন খরিপ ফসল। বিশেষ করে বিপর্যস্ত অবস্থা বাঙ্গি ও কুমড়ার জমির। রোপণকৃত গাছ একইবারেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। বাজারজাতের আগেই মাঠের পর মাঠ জুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এসব ফসল।
Advertisement
কৃষি অফিসের মতে, প্রায় সাড়ে ৩শ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রকৃতির এমন বৈরিতায় দিশাহারা শত শত কৃষক।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, রোববার দিবাগত রাতের বৃষ্টিতে জেলা সদর ও গজারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ৩শ ৪১ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে সবজি ৪০ হেক্টর, ভুট্টা ৭৩ হেক্টর, তিল ৬২ হেক্টর, বাঙ্গি ৫ হেক্টর, বোরো ধান ১৩৯ হেক্টর, পাট ২১ হেক্টর ও মরিচ ১ হেক্টর। এতে বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তবে কৃষকদের দাবি ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।
সোমবার (৬ মে) সরেজমিনে জেলা সদরের রমজানবেগ, খাঁসকান্দি, চরকেওয়ারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ জুড়ে আবাদি ফসল বিনষ্ট হয়েছে। জমিতে গিয়ে অনেক কৃষক কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হয়েছে বাঙ্গি ও কুমড়ার জমি। লতা জাতীয় গাছ, ডগা-পাতা শিলার আঘাতে মাটিতে মিশে গেছে। জমি জুড়ে পড়ে আছে ফসল। অধিকাংশ ভুট্টা গাছ ভেঙে গেছে। বিভিন্ন সবজির গাছগুলো ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত গাছ থেকে কোনো রকমে বেঁচে যাওয়া ফসল তোলার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
Advertisement
রমজানবেগ এলাকায় ৩ কানি জমিতে বাঙ্গি ও কুমড়ার আবাদ করেছিলেন আব্দুল আজিজ ভূইয়া। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, কিছু ফসল বিক্রি করেছি, এখনো অধিকাংশ আছে। এরমধ্যে রাতভর শিলা পড়ে সব শেষ। আমার ৬-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি কিছু সহযোগিতা করে তাহলে বাঁচতে পারবো।
একই এলাকার কৃষক নাহিদ বলেন, আমার বাঙ্গিগুলো এখন আর বিক্রি করার মতো নাই। রোদ উঠলে সব পচে যাবে। কুমড়া যেটা বিক্রি করতাম ৪০-৫০ টাকা, সেটা ১০-১৫ টাকায় নেবে কিনা এটাও সন্দেহ। আমাদের এলাকার শতশত কৃষকের এখন একই অবস্থা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শান্তনা রানী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। তবে এখনই আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, যেসব জমিতে পানি জমেছে সেগুলো নিষ্কাশন করা এবং যে গাছ একেবারে নষ্ট না হয়ে হেলে পড়েছে সেগুলো লাঠি দিয়ে বেঁধে দেওয়া। তাহলে কিছুটা লোকসান এড়ানো যাবে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে খরিপ মৌসুমের কোনো প্রণোদনা নেই। যদি সরকারি সহযোগিতা পাওয়া যায়, তাহলে কৃষকদের মাঝে প্রদান করা হবে।
এফএ/জিকেএস
Advertisement