অর্থনীতি

লেনদেন ছাড়ালো হাজার কোটি, দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমায় ১২ প্রতিষ্ঠান

পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়ছে। ফলে কমে আসছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ।

Advertisement

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (৬ মে) শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলেছে। এর মাধ্যমে শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার। সেইসঙ্গে প্রায় ৩ মাস পর প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে।

এদিন ডিএসইর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও ১৬টি প্রতিষ্ঠান বড় দাপট দেখিয়েছে। লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এ ১৬ প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় আদেশের ঘরশূন্য পড়ে থাকে। অপরদিকে দিনের সর্বোচ্চ দামে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বিপুল পরিমাণে ক্রয়ের আদেশ আসে।

এই ১৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- এস্কয়ার নিট, আইসিবি, আমান কটন, ইয়াকিন পলিমার, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, লুবরেফ বাংলাদেশ, ফু-ওয়াং সিরামিকস, গোল্ডেন সন, ডরিন পাওয়ার, ফারইস্ট নিটিং, সাইফ পাওয়ার টেক, মিথুন মিটিং, মুন্নু ফেব্রিকস, মেট্রো স্পিনিং, গোল্ডেন জুবেলি মিউচুয়াল ফান্ড এবং ফারইস্ট ফিন্যান্স।

Advertisement

এ ১৬ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখানোর পাশাপাশি আরও প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। ফলে বড় উত্থান হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের।

এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কর্যদিবসের মধ্যে তিন কর্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৬ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। আর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ৯৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার।

আর সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭১টির দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। আর ১৬টির দাম একদিনে যতটাই বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে।

Advertisement

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৭২৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে হাজার কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১৫ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে আবারও হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের ৪৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩২ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফারইস্ট নিটিং, ফরচুন সুজ, গোল্ডেন সন, স্যালভো কেমিক্যাল, আইটি কনসালটেন্ট, ওরিয়ন ফার্মা এবং মালেক স্পিনিং।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

এমএএস/এমএএইচ/এমএস