মাত্র সাড়ে চার মাসের মাথায় আবারও বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির বিদ্যমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (৫ মে) ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষায় এবং সুশাসন নিশ্চিত ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক এ বিষয়ে জানান, ন্যাশনাল ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল তাদের মধ্যে কয়েকজন পদত্যাগ করেছিলেন। এ কারণে নতুন করে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। নতুন পরিচালনা পর্ষদ এখন থেকে দায়িত্ব পালন করবে।
আরও পড়ুন: নিয়ম অমান্য করায় ভুল স্বীকার ন্যাশনাল ব্যাংকের
Advertisement
ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন উদ্যোক্তা পরিচালক এবং কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান।
নতুন পর্ষদের অন্য সদস্যরা হলেন- ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন লে. জে. (অব.) মো. সফিকুর রহমান, প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এহসানুল করিম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ কে এম তফাজ্জল হক।
স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, ড. রত্না দত্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদা। আগের পর্ষদের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন ছাড়া নতুন পর্ষদে কাউকে রাখা হয়নি।
আরও পড়ুন: ন্যাশনাল ব্যাংকের রন হক-রিক হকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Advertisement
নানা আর্থিক সমস্যা আর অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া সিকদার গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ সাড়ে চার মাস আগে ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে বাদ পড়েন মনোয়ারা সিকদার, রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার, নাইমুজ্জামান ভূঁইয়া ও মুরশিদ কুলি খান।
কেবল সিকদার গ্রুপ থেকে পারভীন হক সিকদারকে পরিচালক হিসেবে রাখা হয়েছিল। তবে রোববার নতুন পর্ষদ থেকে তাকেও বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ এখন সিকদার গ্রুপের বাইরে চলে গেছে।
সম্প্রতি ন্যাশনাল ব্যাংককে (এনবিএল) ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও এখনই কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চাচ্ছে না ন্যাশনাল ব্যাংক। ২৭ এপ্রিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এর মধ্যেই ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
ইএআর/জেডএইচ/