রাজনীতি

রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অনৈতিক: বাংলাদেশ ন্যাপ

রেলের দুর্নীতি-লুটপাট, অপচয় ও অব্যবস্থাপনা বন্ধ না করে যাত্রীর পকেট লুট করতে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তককে অনৈতিক ও গণবিরোধী হিসাবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

Advertisement

শনিবার (৪ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবি জানান।

বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহারের নামে বাসের চেয়ে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে তারা বলেন, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এরপর গণপরিবহন রেলের টিকিটের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে। পণ্যের পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, ফলে নিত্যপণ্যের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। যার খেসারত সাধারণ মানুষকেই দিতে হবে। নেতৃদ্বয় বলেন, ৪ মে থেকে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হঠকারী ও মানুষের ওপর নতুন অত্যাচারের শামিল। এই পাঁয়তারা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো। বড় বড় প্রকল্পের নামে রেলকে আধুনিকায়ন করার কথা বলা হলেও প্রকৃত অর্থে সেই টাকার যথাযথভাবে ব্যবহার না হয়ে লুট হচ্ছে। লুটের মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। লুটেরাদের দৌরাত্ম্যের কুফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুকে। অথচ সরকার তাদেরই পোষণ করে চলছে।

বাংলাদেশ ন্যাপ নেতৃদ্বয় আরও বলেন, রেলের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ না করে ভাড়া বৃদ্ধির মাধ্যমে রেলের লোকসান কমানো সম্ভব নয়। এমন সিদ্ধান্ত আকাশ কুসুম কল্পনা। এর আগেও কয়েক দফা ভাড়া বাড়িয়ে লোকসান লাঘব করতে ব্যর্থ হয়েছে। রেল বড় বড় প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত, যাত্রীসেবার দিকে তাদের কোনো মনোযোগ নেই। রেল কর্তৃপক্ষ রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের নামে ভাড়া বৃদ্ধি করে দূরপাল্লার যাত্রাপথে রেলের ভাড়া বাসের ভাড়ার চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

Advertisement

তারা বলেন, দুর্নীতি-লুটপাট, অপচয় ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রেলকে আরও লাভজনক খাতে পরিণত করা সম্ভব হতো। তা না করে রেলের ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে দুর্নীতিবাজদেরই দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নাই। বর্তমানে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে যে হারে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে, তাতে যাত্রীরা রেল বিমুখ হবে, রেলে টিকিটবিহীন যাত্রী যাতায়াতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, রাজস্ব আয় কমবে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লুটপাটের সুযোগ আরও বাড়বে। রেলের আয়বর্ধক খাত যেমন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে পণ্যবাহী ট্রেন থেকে আয় বাড়ানো দিকে না ঝুঁকে রেলওয়ে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে আয় বাড়ানোর যে আকাশকুসুম পরিকল্পনা করছে সেটি কার্যত ব্যর্থ বলে অতীতের মত।

রেলের রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রেলপথকে অতীতের মতো নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রাখারও দাবি জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সাধারণ মানুষকে রেলমুখী করে নামমাত্র মূল্যে টিকিট বিক্রি করে রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। ভাড়া না বৃদ্ধি করে রেলের অনিয়ম-দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা বন্ধ করে, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বেদখলকৃত জমি উদ্ধার করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি নানামুখী লাভজনক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে রেলকে ধীরে ধীরে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব।

কেএইচ/এমআরএম/এমএস

Advertisement