অর্থনীতি

তিন কোটি টাকায় ৫০০ একর জমি পেলো চট্টগ্রাম বন্দর

অবশেষে বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য তিন কোটি তিন টাকায় ৫০০ একর সরকারি খাস জমি পেলো চট্টগ্রাম বন্দর। বঙ্গোপসাগরের পাড়ে আউটার রিং রোড ঘেঁসে বাস্তবায়নাধীন প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্পের জন্য প্রতীকী মূল্যে এসব জায়গা বরাদ্দ দেয় সরকার।

Advertisement

সর্বশেষ এসব জমির সরকার নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার জন্য ২ মে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তিন মৌজায় ৫০০ দশমিক ৭০৬৩ একর জমির বিপরীতে পৃথক তিন চালানে এক কোটি এক টাকা করে তিন কোটি ৩ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

জেলা প্রশাসন থেকে বন্দোবস্ত পাওয়া ৫০০ দশমিক ৭০৬৩ এর জমির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণ কাট্টলী মৌজার ৬২ দশমিক ২২৫২ একর, উত্তর হালিশহর মৌজার ৩৩৯ দশমিক ২৬৭৫ একর এবং হালিশহর মৌজায় ৯৯ দশমিক ২১৩৬ একর খাস জমি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) পান্না আকতার জাগো নিউজকে বলেন, বে-টার্মিনালের জন্য ৫০০ একর সরকারি খাস জমি প্রতীকী মূল্যে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে তিন মৌজায় এসব জমির জন্য নির্ধারিত এক কোটি এক টাকা করে তিন কোটি তিন টাকা পৃথক তিন চালানে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন জাগো বলেন, বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য প্রতীকী মূল্যে ৫০০ একর জমি জেলা প্রশাসন থেকে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্য জমা দেওয়া জন্য জেলা প্রশাসন থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এসব মূল্য চালান মূলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে নগরের পতেঙ্গা ও হালিশহর সমুদ্র উপকূলভাগে বিস্তীর্ণ ভূমি এবং সাগরঘেঁষে বে-টার্মিনাল নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৬ সাল থেকে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় জায়গা ভরাট করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রকল্পটির উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বে-টার্মিনাল হলে প্রায় ১২ মিটার ড্রাফট (পানির ভেতরে থাকা জাহাজের অংশ) এবং যে কোনো দৈর্ঘের জাহাজ এখানে ভেড়ানো যাবে। যেখানে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর জেটি-বার্থে সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দৈর্ঘের জাহাজ ভিড়তে পারছে।

এছাড়াও বে-টার্মিনালে একই সঙ্গে ভিড়তে পারবে ৩৫ থেকে ৫০টি জাহাজ। জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা করতে হলেও বে-টার্মিনালে এ জটিলতা থাকবে না। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের জট অনেকাংশে কমে যাবে। খরচ কমে গতি আসবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। বে-টার্মিনাল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বহুগুণ বাড়বে।

Advertisement

এমডিআইএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম