জাতীয়

‘পোশাক শিল্পে ৮০-৯০ শতাংশ শ্রমিক তাদের অধিকার ভোগ করছেন’

বর্তমান বাস্তবতায় শ্রমিকের জীবনমান সহজতর করতে শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।

Advertisement

মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইব্রাহীম হুসাইন অভি।

ফজলে শামীম বলেন, ‘শ্রমিকের নিম্ন মজুরি কাঠামো নির্ধারিত। সে অনুযায়ী তারা সবাই বেতন পান। নিম্নতম মজুরি নির্ধারিত হলেও শ্রমিকরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন পান। যার যোগ্যতা যত বেশি তিনি তত বেশি বেতন পান।’

একদিকে আমরা শ্রমিকের মজুরি বাড়াচ্ছি, অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। ফলে চলমান বাস্তবতায় শ্রমিকের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে সংসার চালাতে

Advertisement

‘তারপরেও শ্রমিকদের একাংশের জন্য বর্তমানের উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাপন করা কিছুটা কষ্টসাধ্য। তার মানে এই নয় যে তারা খেতে পারছে না বা না খেয়ে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু জীবনযাপন করা কিছুটা কঠিন হচ্ছে।’

আরও পড়ুন

ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে শ্রমিকের ইউনিয়ন করার অধিকার মে দিবসের বিষয়ে জানেন না শ্রমিকরা বর্জ্য সংগ্রহকারীদের বিপৎসংকুল জীবন

ব্যবসায়ীরা নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকের বেতন দিচ্ছেন দাবি করে তিনি বলেন, কিন্তু ব্যবসায়ীদের একার পক্ষে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। এখানে সরকারের কিছু দায়িত্ব আছে বলে আমি মনে করি।’

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন শ্রেণির-পেশার মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। এর অধীনে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। একদিকে আমরা শ্রমিকের মজুরি বাড়াচ্ছি, অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। ফলে চলমান বাস্তবতায় শ্রমিকের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে সংসার চালাতে।’

Advertisement

অধিকার বলতে আমরা বুঝি একজন শ্রমিকের আইন দ্বারা স্বীকৃত যে অধিকার তা যথাযথভাবে ভোগ করা। শ্রম আইন যদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সঙ্গে মিল রেখে প্রস্তুত করা হয় এবং তা যথাযথভাবে পরিপালন হয় সেক্ষেত্রে শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত হয়

এক্ষেত্রে সরকার শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার অধীনে সহায়তা করতে পারে এবং এর মাধ্যমে শ্রমিকের জীবনযাপন কিছুটা সহজ হবে বলে আমি মনে করেন শামীম।

শ্রমিকের অধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অধিকার বলতে আমরা বুঝি একজন শ্রমিকের আইন দ্বারা স্বীকৃত যে অধিকার তা যথাযথভাবে ভোগ করা। তবে এখানে দেখার বিষয় শ্রমিক আইন মানবাধিকারের সঙ্গে যথাযথভাবে অ্যালাইন করা আছে কি না। শ্রম আইন যদি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সঙ্গে মিল রেখে প্রস্তুত করা হয় এবং তা যথাযথভাবে পরিপালন হয় সেক্ষেত্রে শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত হয়।’

তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন অনেক শক্তিশালী এবং যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এটা আরও বেশি শক্তিশালী।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমি বলবো না যে এটা শ্রেষ্ঠ আইন। উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের দেশের আইনে কিছুটা দুর্বলতা আছে। সেখানে আমাদের কাজ করতে হবে যাতে আমরা সেটা আরও উন্নত করতে পারি। আমরা সেখানে কাজ করছি একযোগে।’

শ্রমিকের অধিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে সব সেক্টর প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে এবং ভালো করছে সে সব সেক্টরের শ্রম আইন বাস্তবায়িত। শ্রমিকরা তার যথাযথ অধিকার ভোগ করছে। আমি যদি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কথা বলি তাহলে সেখানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শ্রমিক তাদের অধিকার ভোগ করছেন এবং সব ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন আইন অনুযায়ী।’

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ক্ষেত্রে এটা সঠিক করে বলা সম্ভব নয় কত শতাংশ শ্রমিক আইন দ্বারা স্বীকৃত অধিকার ভোগ করছেন। এখানে কিছুটা ব্যত্যয় থাকতে পারে বলে মনে করেন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।

এএসএ/এএসএম