রাজনীতি

কম মজুরিতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টের: রিজভী

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, বাজার মূল্যের সঙ্গে অসংগতি এবং কম মজুরিতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

এর আগে বুধবার মহান মে দিবসের সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভা করে শ্রমিক দল।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ১ মে, ঐতিহাসিক মহান মে দিবসে শ্রমিক দল আগামীকাল দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের সামনে শ্রমিক সমাবেশ করবে এবং সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে শ্রমিকদলের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান রিজভী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিবিএস এর হিসেব অনুযায়ী, ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক। শ্রমিক সমাজের মর্যাদার জন্য একটি দিন বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে-মে দিবস। বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাব ও অগণতান্ত্রিক শ্রম আইনে মালিক পক্ষের স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়ায় শ্রমিক সমাজ সর্বত্র হয়রানিসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে অগণতান্ত্রিক ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে সাজানো সংসদ তৈরি করে একক ক্ষমতায় স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষের প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত। সরকারের গ্যাস, বিদ্যুৎ এর দাম বৃদ্ধির ফলে প্রভাব শুধু সাধারণ জনগণের ওপরই নয়, উৎপাদন খাত, শিল্প কলকারখানাগুলোতেও পড়েছে। ফলে বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা। সরকারি খাতের পাটকল ও চিনিকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বেকার হয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। মানবেতর পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পরিবার। টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারি দপ্তরগুলোতে নিয়মিত পদ বিলুপ্ত করে আউট সোর্সিং নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে শ্রমের ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শিক্ষিত লাখ লাখ বেকার। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সোনালী আশঁ খ্যাত পাটের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ, বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান দেশে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত চিনির পরিবর্তে কেমিক্যালযুক্ত বিদেশি চিনির ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ হারাচ্ছে শ্রমজিবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা।

Advertisement

অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শোভন কাজ, নিরাপদ কর্মক্ষেত্রসহ অন্যান্যদের ন্যায় শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থার দাবিতে শ্রমিকদলের সমাবেশ ও র্যালিতে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, শ্রমিকদলের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন করা হয়েছে। মহান মে দিবস পালনের লক্ষ্যে শ্রমিকদলের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচটি উপকমিটি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, স্মরণকালের ভয়াবহ তাপদাহ উপেক্ষা করে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই মহান দিনে শ্রমজিবী মানুষ তাদের দুঃখ কষ্টের প্রতিবাদে শ্রমিকদলের সমাবেশে উপস্থিত হবেন।

সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন।

কেএইচ/এসএনআর/এএসএম