রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এমনিতেই তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে, তার ওপরে বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে এসব এলাকার শিশুরা। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে মশার উপদ্রব।
Advertisement
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মধ্যবাড্ডা এলাকায় টানা লোডশেডিং ছিল। এরপর দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টার পর পর্যন্ত লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। বিকেল ৫টার পর বিদ্যুৎ এলেও কিছু সময় পর ফের লোডশেডিং শুরু হয়। রাত ৯টা পর্যন্ত টানা বিদ্যুৎ ছিল না এসব এলাকায়।
তবে, এ প্রতিবেদন লেখার সময় বিদ্যুৎ আসে। এছাড়া বাড্ডা এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এবং পরে দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না।
আরও পড়ুন
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর রামপুরা থেকে বসুন্ধরা পর্যন্ত পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) ১৩২ কেভি বৈদ্যুতিক তারের লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা এলাকায় দীর্ঘসময় লোডশেডিং হয়েছে। মাঝে কিছু সময় টঙ্গী পাওয়ার স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ এনে এসব এলাকায় সরবরাহের চেষ্টা করা হলে টঙ্গী স্টেশনে অতিরিক্ত চাপ পড়ায় সেটিও সম্ভব হয়নি।
তীব্র গরমে বাসার বাইরে সাধারণ মানুষ
এত দীর্ঘসময় লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে এসব এলাকার সাধারণ মানুষকে। একদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্যান ও এসি কিছুই চালাতে পারছেন না সাধারণ মানুষ, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে পানির সংকট। বিদ্যুৎ না থাকায় রিজার্ভ ট্যাংকে পানিও তোলা সম্ভব হচ্ছে না। মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করতে পারছেন না অনেকে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ আর পানির সংকটে এক ধরনের অসহায় হয়ে পড়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা কাজী মাসুম বলেন, সারাদিন অফিসে ছিলাম। স্ত্রী ফোন করে জানালো বাসায় বিদ্যুৎ নেই। বাচ্চাদের নিয়ে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি। অফিস থেকে এসে দেখি বিদ্যুৎ নেই, পানিও নেই। যে গরম পড়তেছে, এর মধ্যে পানি-বিদ্যুৎ না থাকায় খুব খারাপ অবস্থা হয়েছে আমাদের।
Advertisement
আরও পড়ুন
বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বাড্ডা এলাকায় দীর্ঘ সময় লোডশেডিংএকই এলাকার নাফিসা বেগম বলেন, গরমে সারাদিনই বলতে গেলে বিদ্যুৎ নেই। চিন্তা করেন কী অবস্থা আমাদের। বাচ্চারা অনেক বিরক্ত করতেছে। সারাদিনই এত কষ্টে গেছে বলার মতো না। বিদ্যুৎও নেই, পানিও নেই।
বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে এসব এলাকার মানুষ বাসা থেকে বেরিয়ে অলি-গলিতে ভিড় করছেন। রিজভী নামের একজন বলেন, গরমে বাসায় থাকা সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ নেই রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছি। বিদ্যুৎ এলে রুমে যাবো। এ অবস্থায় রুমে গেলে গরমে সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে।
জানতে চাইলে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, রামপুরা থেকে বসুন্ধরা পিজিসিবির ১৩২ কেভি লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। মাঝে টঙ্গী স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ এনে সাপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। অতিরিক্ত চাপের কারণে সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। এখনো ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং আছে। এক ঘণ্টার মধ্যে পুরো লাইন চালু হলে সমস্যা কেটে যাবে।
এনএস/এমএএইচ/এএসএম