দেশজুড়ে

তীব্র গরমে স্বস্তি দিচ্ছে দেশে তৈরি ‘ওয়াটার মিস্ট ক্যানন’

সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও তীব্র তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচণ্ড গরমে বাইরে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় নগরবাসীকে প্রশান্তির ছোঁয়া দিচ্ছে ‘ওয়াটার মিস্ট ক্যানন’। এর মাধ্যমে কুয়াশার মতো করে শহরজুড়ে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

মেশিনটি তৈরি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্দেশনায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে। সিটি করপোরেশনের একজন প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জেরই একজন বাসিন্দা মেশিনটি তৈরি করেছেন।

সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়ায় অন্য মেশিনের তুলনায় ‘ওয়াটার মিস্ট ক্যানন’ তৈরিতে খরচও অনেক কম হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে একটি সড়কে নামানো হয়েছে। আরও কয়েকটি মেশিন নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন জায়গায় কুয়াশার মতো পানি ছিটিয়ে আসছে এ ওয়াটার মিস্ট ক্যানন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে প্রতিদিন ছয় হাজার লিটার পানি ছিটানো হচ্ছে। যতদিন তাপপ্রবাহ থাকবে ততদিন ওয়াটার মিস্ট ক্যাননের মাধ্যমে পানি ছিটানো হবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারি চলাকালীন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এ ধরনের একটি মেশিন নেদারল্যান্ডস থেকে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে কিনে আনে। তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দেশীয় প্রযুক্তিতে কম খরচে এমন একটি মেশিন তৈরি করা যায় কি না সে প্রস্তাব রাখেন। সে অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) উৎপল বড়ুয়া কাজ শুরু করেন। তাকে সহযোগিতা করেন ইমরুল কায়েস নামের একজন। সেইসঙ্গে গাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত করে মেশিনটি তৈরি করতে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যা ঢাকা উত্তরের কেনা মেশিনের তুলনায় অনেক কম।

আরও পড়ুন

চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ ব্যবস্থা

সবুজ নামের একজন বলেন, ‘তীব্র গরমের মধ্যে মানুষকে স্বস্তি দিতে এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এজন্য মেয়রকে ধন্যবাদ জানাই। আরও কয়েকটি মেশিন যেন সড়কে নামানো হয়।’

শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তীব্র গরমে সারাদেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জনসাধারণকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে ‘ওয়াটার মিস্ট ক্যানন’। বিষয়টি ইতিবাচক।

Advertisement

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) উৎপল বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, মেয়রের নির্দেশনায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে মেশিনটি তৈরি করা হয়েছে। আমার তত্ত্বাবধানে চাষাঢ়া এলাকার বাসিন্দা ইমরুলের ওয়ার্কশপে মেশিনটি বানানো হয়েছে। প্রায় ১০ দিন ধরে মেশিনটি নারায়ণগঞ্জ শহরে চলছে।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আপাতত একটি নামানো হয়েছে। আরও কয়েকটি নামানোর পরিকল্পনা করা রয়েছে।

মেশিনটির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমানো যাবে না, তবে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে জানিয়ে সিটি করপোরেশনের এ প্রকৌশলী বলেন, মানুষ তীব্র গরম থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। নগরীর সড়কে ধুলাবালিও কমানো যাবে। যেখানে পানি ছেটানো হচ্ছে সেখানকার মানুষ এর ফিডব্যাকও ভালো দিচ্ছেন।

‘নরমাল কোনো গাড়ি দিয়ে পানি ছিটাতে গেলে প্রায় ২৫ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ মেশিনের মাধ্যমে অল্প পরিমাণ পানি লাগে। এরসঙ্গে ফ্যান সংযুক্ত থাকায় ছিটানো পানিও থাকে ঠান্ডা’, যোগ করেন উৎপল বড়ুয়া।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা মেশিনটি দিয়ে ভালোই সার্ভিস পাচ্ছি। নির্মাণ খরচও তুলনামূলক অনেক কম। আরও দুটি মেশিন নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এসআর/এমএস