গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মজিদের নাম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেসামরিক গেজেটে তালিকাভুক্ত করতে তার ভাইয়ের করা আবেদন ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্যে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
রোববার (২৮ এপ্রিল) এ বিষয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বিশুবাড়ী হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বিখ্যাত কাটাখালী সেতু ভেঙে পাকবাহিনীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করতে গিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। এরপর দীর্ঘ ৫০ বছরেও আব্দুল মজিদকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
পরে ২০০৩ সালের ৯ এপ্রিল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আব্দুল মজিদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য তার ভাই মোফাজ্জল হোসেন আবেদন করেন। ওই আবেদন অনুসারে গোবিন্দগঞ্জের ইউএনও ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি একটি চিঠির মাধ্যমে ২০০৪ সালের ২২ আগস্ট আব্দুল মজিদ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এমন দাবির স্বপক্ষে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ও সাক্ষ্য প্রমাণাদিসহ উপস্থিত থাকতে বলেন।
Advertisement
উক্ত চিঠি অনুসারে রিট পিটিশনার সব কাগজপত্র ও স্বাক্ষ্য প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন। এরপর ২০০৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবরে উক্ত সভার মতামত পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চারটি তালিকা থাকলেও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোটার তালিকাটি গাইবান্ধার সাব-জজ (২য় আদালত) কর্তৃক ১৯৯৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তারিখের এক আদেশে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য সংশ্লিষ্টদের অভিমত এবং স্থানীয়ভাবে গোপনে অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিম্নোক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক বলে কমিটির সব সদস্য অভিমত প্রকাশ করেন। উক্ত তালিকায় শহীদ আবদুল মজিদের নাম তালিকার ৩ নং ক্রমিকে ছিল।
কিন্তু দীর্ঘ ৫০ বছরে আব্দুল মজিদের নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তভুক্ত না করায় ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবারে আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদন নিষ্পত্তি না করায় গত ২৩ এপ্রিল আব্দুল মজিদের ভাই হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আজ ওই রিটের শুনানি শেষে সচিব বরাবরে করা আবেদন ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এফএইচ/এসআইটি/জেআইএম
Advertisement