দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। চতুর্থ দফায় হিট অ্যালার্ট (তাপপ্রবাহের সতর্কতা) জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের ইতিহাসে রেকর্ড টানা তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এতে বেশি কাহিল শিশুরা। এর মধ্যেই আজ থেকে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
Advertisement
তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ খোলায় যাতায়াত ও ক্লাসে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীর কোনো ক্ষতি হলে তার দায় সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় সংগঠনটি।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু বিবৃতি উল্লেখ করেছেন, তীব্র তাপপ্রবাহে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা বন্ধ রেখে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম তথা পাঠদানের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছিল অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সারাদেশের তীব্র তাপপ্রবাহের তেমন কোনো উন্নতি না হওয়া সত্ত্বেও সরকার রোববার থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিপত্র জারি করেছে।
এতে আরও বলা হয়, সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য দেশের সব মানুষ। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা তীব্র তাপপ্রবাহ চলমান থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে বাধ্য হচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহে সরকারি সিদ্ধান্তে দেশের কোথাও যদি কোনো শিক্ষার্থীর কোনো রকম জীবন বিপন্ন ঘটে বা কোনো রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার সব দায়ভার সরকার ও সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।
Advertisement
এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে সরকারের আরেকটু অপেক্ষা করা উচিত ছিল বলে অভিমত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। এখনই স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হয়নি বলে মত দিয়েছেন তারা।
শিশুবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সফি আহমেদ বলেন, বর্তমানে যে তাপমাত্রা, তাতে এরমধ্যে শিশুদের কোনোভাবেই ঘর থেকে বের হওয়া উচিত না। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে শিশুরা বাইরে গেলে নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখাই ভালো।
আরও পড়ুন: তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তখন স্কুল খুললে ভালো হতো। এখন যেহেতু সরকারি সিদ্ধান্তে স্কুল খোলা হচ্ছে, তাই বাচ্চাদের পোশাক, স্কুলের পরিবেশসহ আনুষঙ্গিক সব বিষয়ে খোঁজ রাখতে হবে।
Advertisement
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ছুটি বাড়ানো হয়। এতে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যে শিখন ঘাটতি হয়েছে, তা পূরণে এখন থেকে শনিবারও মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা খোলা থাকবে।
এদিকে, সময়সূচিতে পরিবর্তন এনে ক্লাস শুরু করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নতুন সূচি অনুযায়ী—এক শিফটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। আর দুই শিফটের বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় শিফট পৌনে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। তাছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চললেও বন্ধ থাকবে অ্যাসেম্বলি। পাশাপাশি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় আপাতত বন্ধই থাকছে।
এএএইচ/এমআরএম