দেওয়ালের পুরোটা অংশ জুড়ে দখল নিয়েছে বেগুনি রঙের অসংখ্য ফুল। রঙিন এ ফুলগুলো যে কারও নজর কাড়তে বাধ্য। এই ফুলগুলোই পরিণত হবে সুস্বাদু ফলে। যার নাম ‘প্যাশন ফ্রুটস’।
Advertisement
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ফুলটির সঙ্গে পরিচিত না হলেও, ফলের স্বাদ নিয়েছেন অনেকেই। কেউ ফলটিকে চিনেন পাহাড়ি ফল হিসেবে, আবার কেউবা চিনে আনারকলি নামে। শরীয়তপুরের জাজিরায় লাগানো হয়েছে এই প্যাশন ফ্রুটসের গাছ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাজিরা পৌরসভার ছনখোলা এলাকার বেরাক আলী হাওলাদারের ছেলে সেলিম হাকিদার এক বছর আগে এলাকায় ‘চাঁদের বাড়ি’ নামের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলেন। রেস্টুরেন্টটির শোভাবর্ধন করতে তিনি ঢাকার বৃক্ষ মেলা থেকে ২৬০ টাকা দরে ৬০টি প্যাশন ফ্রুটসের গাছ কিনে নিয়ে আসেন।
তবে তিনি তখনো জানতেন না এটিও একপ্রকার ফলের গাছ। তিনি মূলত ফুলের রঙের প্রতি আকর্ষিত হয়ে কিনে এনেছিলেন গাছগুলোকে। পরে গাছগুলোকে রেস্টুরেন্টের দেয়ালের সঙ্গে লাগানো হলে কিছুদিনের মধ্যে আসা শুরু করে বেগুনি রঙের ফুল। পরে সেই ফুলগুলো রূপ নেয় গোলাকার একটি ফলে। প্রথমে ফলগুলোকে জংলী ফল ভেবে ছিড়ে ফেলে দেওয়া শুরু করে রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা। পরে তারা যখন জানতে পারে এটিও একটি ফল, যার নাম প্যাশন ফ্রুটস। তখন থেকেই গাছগুলোর পরিচর্যা বাড়ানোর কথা বলেন তারা।
Advertisement
রেস্টুরেন্টটির কর্মচারী সাকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি জানতাম না এটি আনারকলি ফল। আমরা যখন গাছগুলো ছাটাই করতাম, জংলী ফল ভেবে ছিড়ে ফেলে দিতাম। শুধু সৌন্দর্যের জন্য ফুলগুলো রাখা হতো। এখন থেকে ফুলের পাশাপাশি ফলগুলোর পরিচর্যা করবো।
সেলিম হাকিদারের ভাতিজা জয় হাকিদার বলেন, রেস্টুরেন্টের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আমার চাচা এ গাছগুলো নিয়ে এসেছিলেন। আমি নিজেও জানতাম না এটি একটি ফল, যা খাওয়া যায়। তবে আমি কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে এমন একটি ফল খেয়েছি, তবে এটিই যে সেই ফল বুঝতে পারিনি। এখন বুঝতে পেরেছি তাই এখন থেকে ফলটি খাবো এবং গাছগুলোর প্রতি যত্ন বাড়াবো।
চাঁদের বাড়ি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মুকুন্দ বিশ্বাস বলেন, আমাদের রেস্টুরেন্টেই প্যাশন ফ্রুটসের নানা ড্রিংকস আইটেম পাওয়া যায়। আমরা মালয়শিয়া থেকে এই ফলের ফ্লেভার নিয়ে আসি। তবে আমাদের রেস্টুরেন্টেই যে ফলটি ফলেছে তা বুঝিনি। এখন যেহেতু জানতে পেরেছি, তাই আমরা এই ফলগুলোকেই ড্রিংকসে ব্যবহার করবো।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্যাশন ফ্রুটস একটি ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল। এটি বিদেশি ফল হলেও আমাদের দেশের মাটি ফলটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায়, বর্তমানে পাহাড়ি অঞ্চল, খুলনা ও উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। আমাদের জেলার মাটিও এ প্যাশন ফ্রুটস চাষের জন্য উপযোগী। কেউ যদি এ ফলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে চায় তাহলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
Advertisement
বিধান মজুমদার অনি/এনআইবি/জেআইএম