‘খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে দুর্ভিক্ষ হয়। এটি সহজ কথা। আমরা দুর্ভিক্ষের চিত্র এভাবেই দেখে আসছি। এই চিত্র মানব ইতিহাসে ভয়ঙ্কর। ঠিক একইভাবে জ্বালানি নিরাপত্তার ঘাটতি থাকলেও ভয়ঙ্কর সংকট হতে পারে। এখন জ্বালানি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। এটি হচ্ছে মূল কথা। দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই।’
Advertisement
আইএমএফ বিদ্যুৎ, গ্যাস, সারের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে উৎপাদন ব্যয়ের মূল্য নির্ধারণের যে পরামর্শ দিয়েছে, সে প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম জাগো নিউজকে একথা বলেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সরকারি ভর্তুকি কমিয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এবং বাড়তি অর্থ সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামে খরচ করার সুপারিশ তাদের। ঢাকা সফররত আইএমএফ মিশন অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এই প্রোগ্রামে আরও বেশি দরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করা ও তাদের মাসিক ভাতার আওতায় আনার কথাও বলে।
আরও পড়ুনভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ-গ্যাস-সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ আইএমএফ’রবাড়তে পারে তেলের দাম, প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বললো আইএমএফআইএমএফের এই প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার দিনভর অর্থ বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে টানা বৈঠক করে। একই সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনীতি, ব্যাংকিং সেক্টর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আইনের প্রয়োগ, গোপন ঋণ এবং ব্যাংকগুলো একীভূত করার বাংলাদেশ ব্যাংকের যে উদ্যোগ এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা করে প্রতিনিধি দলটি।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে সামসুল আলম বলেন, ‘খাদ্যের অভাব হলে সরকার সংগ্রহ করে বিনা পয়সায় সরবরাহ করে। নোঙরখানা খুলে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। একইভাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে জনজীবনে স্বস্তি দেওয়া জনদায় হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতে দাম বাড়ানো হবে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।’
‘মানুষ তো অতিষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ নেই। গরমে পুড়ছে। দাম বাড়ানোর কথা আলোচনা করাও যায় না। অথচ সরকার এমন সংকট দেখিয়েই বারবার দাম বাড়ায়। খেসারত দেয় সাধারণ মানুষ। কোনো জবাবদিহিতা নেই। প্রশ্ন করলেই বরং বিপদ।’
তিনি বলেন, ‘দাম কমানোর সুযোগ আছে। ফ্রি সরবরাহ করে ‘জ্বালানি দুর্ভিক্ষ’ থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে। মানুষ তো বুঝতে পারছে না কী ঘটে গেছে, কী অপেক্ষা করছে? আগে দরকার স্বস্তি। এখন জ্বালানি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। এটি হচ্ছে মূল কথা। দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই। জ্বালানি নিয়েই সরকার সবচেয়ে অবিচার করছে।’
এএসএস/এএসএ/জেআইএম
Advertisement