জাতীয়

মনোমুগ্ধকর রক্তিম সাজে সেজেছে হাতিরঝিল

কৃষ্ণচূড়া লাল হয়েছে ফুলে ফুলে.....তুমি আসবে বলে। রংধনু মেঘ ছুয়েছে আকাশ নীলে.....তুমি আসবে বলে। রূপালী ঢেউ খেলে নদীর জলে... পায়ে পায়ের কাছে তুমি আসবে বলে। জনপ্রিয় বাংলা গানের কলিটি হাতিরঝিলের আশপাশে মনে হলে একজন মানুষের মধ্যে যেন স্বর্গ সুখ ফিরিয়ে আনে। কয়েকদিন আগে শুরু হলো বৈশাখ। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দুই মাস গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল কৃষ্ণচূড়া। আর এই গ্রীষ্মের শুরুতে রাজধানীর হাতিরঝিলে মনোমুগ্ধকর রক্তিম ফুলে সেজেছে প্রকৃতির অপরূপ সাজে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে হাতিরঝিল এলাকা। খুব শান্ত জলও আছে। গাঁয়ের ছোট্ট নদীটির মতো বইছে। এ নদীর গতি রোধ করার কেউ নেই। বরং উপভোগ করার অগণিত মানুষ। হাতিরঝিলের সড়ক রাস্তার পাশে যেন সূর্যের সবটুকু উত্তাপ নিয়ে ফুটেছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া। পথচারীদের সহজেই চোখে পড়বে এ ফুল। বহু দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন গাছগুলোতে আগুন জ্বলছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলই নয় হাতিরঝিলে শুভা পাচ্ছে রং বেরংয়ের বিভিন্ন ফুল। এর মধ্যে শহরের বিরল ফুল জারুল অন্যতম। চমৎকার বেগুনি রংয়ে রাঙানো এ জারুল ফুল আমাদের মনের গহীনে জাগ্রত করে এক অন্য রকম ভালোলাগা। এছাড়া রয়েছে সোনালু ফুল। আমাদের দেশে সোনালু গাছ আগের মতো তেমন একটা চোখে পড়ে না। তবে হাতিরঝিলে এই বিরল ফুল দেখা গেছে। গ্রীষ্মের বাতাসে হলুদ সোনালু ফুলের দোলা প্রকৃতিতে সৃষ্টি করে এক অন্য রকম আবহ। গ্রীষ্মে হলুদ পরী হয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে এই সোনালু ফুল। সোমবার বিকেলে হাতিরঝিল এলাকায় কৃষ্ণচূড়াই শুধু নয় জারুল, সোনালু, রাধাচূড়া ও অন্যান্য বিভিন্ন মৌসুমী ফুল ফুটে প্রকৃতি আলো করে রেখেছে। হাতিরঝিলের ব্রিজের উপরে লাগানো গাছেও ফুটেছে ফুল। বিনোদন প্রেমিরা যেন এসব ফুটা ফুলের প্রেমে মঝেছে। জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কায়। ভিনদেশি এ ফুল আমাদের দেশে নতুন নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে যখন এ ফুল ফোটে তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীও চলার পথে ক্ষণিক থমকে তাকান। কৃষ্ণচূড়ার উচ্চতা খুব বেশি হয় না। সর্বোচ্চ ১১-১২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে এর শাখা পলক অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে। বছরের অন্য সময় গাছগুলো চোখে পড়ে না খুব একটা। এপ্রিল-মে মাসে মানুষের দৃষ্টিতে আসে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এ ফুল। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। কুড়ি আসার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ভরে যায় ফুলে ফুলে। কৃষ্ণচূড়া ফুল ৭-৮টি পাপড়িযুক্ত গাঢ় লাল। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে। হাতিরঝিলের চারপাশ দিয়ে অংসখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ থাকলেও বেশির ভাগ ফুল ফুটেছে এফডিসি গেইট সংলগ্ন এলাকায়, এছাড়া বেগুনবাড়ি এলাকা, মধুবাগ এলাকা, মগবাজার এলাকার পাশ দিয়ে বেশি দেখা গেছে। বিনোদনে আসা কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, আসলে হাতিরঝিলে লেকের পাশ দিয়ে যেসব গাছ লাগানো হয়েছে সেগুলোর নির্মল বাতাস ছাড়া ফুটেছে অনেক ধরনের ফুল। এসব ফুলের সঙ্গে সময় কাটাতে পেয়ে মনটা অনেকটা প্রকৃতির ছুয়া পেয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সরকারের উচিত নগরীতে এমন আরো বিনোদন স্পট তৈরি করা। এতে নগরবাসী কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রকৃতির স্পর্শ পাবে বলে মনে করছেন তারা।এসআই/জেএইচ/এএইচ/পিআর

Advertisement